বাসস
  ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৩০

ভোলার নদী গুলোর  মৎস্য অভয়ারণ্যে ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা

ছবি : বাসস

আল-আমিন শাহরিয়ার

ভোলা,৩ অক্টোবর,২০২৫,(বাসস) :  ইলিশের নিরাপদ প্রজনন এবং বেড়ে ওঠার লক্ষ্যে আজ শুক্রবার মধ্যরাত থেকে ভোলার মেঘনা, তেঁতুলিয়া,কালাবাদর,বেতুয়া ও ইলিশা নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। 

আগামীকাল (৪ অক্টোবর) শনিবার থেকে আগামী ২৫ অক্টোবর ২২ দিন পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন,মৎস্য অধিদপ্তর। 

এসময় নৌবাহিনী,নৌ-পুলিশ,কোষ্টগার্ড এবং বিমান বাহিনীর প্রহরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মৎস্য বিভাগ জানায়, ভোলার সাত উপজেলার মেঘনা,তেঁতুলিয়া,কালাবাদর ও ইলিশা নদীতে মাছ শিকার করা নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা প্রায় দেড়লাখ। তবে বেসরকারীভাবে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে প্রায় আড়াই লাখ জেলে।

জেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, ইলিশের নিরাপদ প্রজনন এবং বেড়ে ওঠার জন্য প্রতি বছর মেঘনা ও তেঁতুলিয়া'সহ সংযোগ নদীগুলোতে  মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন তারা। তার ধারাবাহিকতায় এবার ৪ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এ সময়ের মধ্যে মেঘনা নদীর চর ইলিশা থেকে চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং তেঁতুলিয়া নদীর ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারে সকল প্রকার মাছ ধরা বন্ধ থাকবে।

এই অভিযান সফল করার লক্ষ্যে মৎস্য বিভাগ সভা, সমাবেশ, লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিংসহ বিভিন্নভাবে প্রচার চালাচ্ছে। 

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বাসস'কে জানান, এ নিষেধাজ্ঞা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত। তিনি জানান,নিষেধাজ্ঞাকালীন জেলার নিবন্ধিত জেলারা ২৫ কেজি করে চাল পাবেন। ইতিমধ্যে ওই চালের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এদিকে সাম্প্রতিক মৌসুমের শুরুতে ভোলার নদনদী ছিলো ইলিশ-শূন্য।কিন্তু মৌসুমের শেষভাগে যেমূহুর্তে ইলিশের মুখ দেখা শুরু করলো জেলেরা সেমুহুর্তেই ইলিশ ধরায় আসলো নিষেধাজ্ঞা। এতে ভোলার জেলেরা হতাশ। তারা বলছেন,নদীতে ইলিশ না থাকায় পুরো মৌসুমেই আমরা বেকার সময় কাটিয়েছি কিন্তু যখন ইলিশ পাওয়া শুরু হলো তখন আবার নিষেধাজ্ঞা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়েছে। 

জেলা সদরের ইলিশা মাছঘাটের আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি বাদশা মিয়া জানান,ভরা মৌসুমে ইলিশ না পেয়ে আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত তেমনি জেলেরাও হতাশ। তাই ১২ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা দিলে সবারই ভলো হতো। 

জেলার চরফ্যাশনের সামরাজ মৎস্য অবতরন কেন্দ্রর জেলে সুফিয়ান মাঝি,বাহালুল ও তারাপদ মাঝির মুখে একই দাবীর সূর। তারা বলেন,নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে আমাদেরকে যথাযথ সাহায্য করলে আমরা লোকসান ও ক্ষতি থেকে কিছুই মুক্তি পাবো।

তথ্যমতে,গত শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার আন্ত:মন্ত্রনালয়ের বিশেষ সভায় 'মা' ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিষদ আলোচনা করেন। তিনি বলেন,আশ্বিনী পূর্ণিমার আগের চার দিন ও অমাবস্যার পরের তিন দিনকে অন্তর্ভুক্ত করে মোট ২২ দিন ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২৫’ চলবে। এ অভিযানে মৎস্য কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অংশ নেবে।

এ সময় ৩৭ জেলার ১৬৫ উপজেলার ৬ লাখ ২০ হাজার জেলে পরিবারকে সরকারিভাবে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সহায়তা দেয়া হবে বলেও জানান,সরকারের এই মৎস্য উপদেষ্টা।