ছবি: বাসস

ফেনী, ১২ জুন, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি ছাত্রশিবিরকে নির্মম নির্যাতন করেছে। তারা ইসলামী আন্দোলনের ভাইদের জীবন্ত গায়েব করে দিয়েছে। শিবিরের নেতাকর্মীরা নিজেদের  বাবা-মা এবং পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের জানাজায় পর্যন্ত  অংশ নিতে পারেননি। এমন নিষ্ঠুর নির্দয় ঘটনা ঘটেছে এই বাংলাদেশে। ছাত্র আন্দোলনের  ইসলামী ছাত্রশিবিরের ২৩৪ জন ভাই জীবন দিয়েছেন।

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার ওসমানিয়া আলিম মাদরাসার ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আমাদের অসংখ্য ভাই জীবন দিয়েছেন। প্রায় এক হাজার ভাইকে গুম করে নির্যাতন করা হয়েছে। এই গুম করা ভাইদের কাউকে শহীদ হিসাবে ফেরত দেয়া হয়েছে। কারও চোখ তুলে নেয়া হয়েছে আবার কারও অঙ্গহানি করা হয়েছে। আবার অসংখ্য ভাইদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।  দুঃখজনক হলেও সত্য এখনো আমাদের ৭ জন ভাইয়ের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তারা কোথায় আছেন, কীভাবে আছেন আমরা জানি না। ৫ আগস্টের পরে প্রশাসনসহ বিভিন্ন  মাধ্যমে তাদের খুঁজে পেতে চেষ্টা করেছি, কেউ তাদের খোঁজ দিতে পারেনি।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ পথপরিক্রমায় ইসলামী ছাত্রশিবির মহিরুহে পরিণত হয়েছে। ছাত্রশিবির প্রচলিত ও পারিবারিক শিক্ষা ব্যবস্থার বাহিরে নৈতিকতার শিক্ষা দেয়, নামাজ কাযা বন্ধ করে। হজরত ইউসুফ (আ.) এর চরিত্রের মত ব্যক্তিত্ব তৈরির জন্য ছাত্রশিবির কাজ করে। দায়িত্বশীলদের মোটিভেশনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ রেজাল্ট করে। একজন শিক্ষার্থীকে অভিভাবক ও শিক্ষকরা ২৪ ঘণ্টা পাহারা দিতে পারেন না, অথচ ছাত্রশিবির তাদের মনে আল্লাহর ভয় ঢুকিয়ে নিজেকেই নিজের পাহারাদার বানিয়ে দেয়।

ছাত্রশিবির বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নেয়ামত উল্লেখ করে শিবির সভাপতি জাহিদুল বলেন, এতদিন ছাত্রশিবিরকে উপস্থাপন করতে দেয়া হয়নি। কোথাও একসাথে বসতে দেয়া হয়নি। ৫ জন বসলে গোপন বৈঠক, জঙ্গি বৈঠক বলে গ্রেফতার করা হতো। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় ছাত্রশিবিরের গন্তব্য নিকটে। ইসলামি ছাত্রশিবিরের পথচলায় যারা অতীত থেকে শিক্ষা নেয় নাই, মোকাবেলা করতে গিয়ে নিজেদের বিপর্যয় ডেকে এনেছে। ভবিষ্যতে ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলা না করে জুলুমতন্ত্র দিয়ে মোকাবেলা করতে চাইলে পরিণতি অতীতের মত হবে ইনশাআল্লাহ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি আবু হানিফ হেলাল ও পরিচালনা করেন সেক্রেটারি ইমাম হোসেন আরমান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে  বক্তব্য রাখেন জামায়াতের জেলা আমির মুফতি আবদুল হান্নান, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, সমাজসেবা সম্পাদক ডা: রেজওয়ানুল হক, সাবেক প্রচার সম্পাদক খালেদ মাহমুদ, সাবেক এইচআরডি সম্পাদক শরীফুল ইসলাম।