শিরোনাম
সিলেট, ২ জুন ২০২৫ (বাসস): গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টি ও ভারতের আসামের পাহাড়ি ঢলে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমার প্রায় দুই মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে সিলেটের জকিগঞ্জে ডাইক (নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ) উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সিলেট ও মৌলভীবাজারে নদীর পানি ৬টি স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে ১৮৪ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৪৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৩৪ সেন্টিমিটার, মনু নদীর রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় ২৭ সেন্টিমিটার এবং মৌলভীবাজার পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সোমবার ভোররাতে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের পাশ দিয়ে কুশিয়ারা নদীর ডাইক উপচে পানি ঢুকতে শুরু করে। একই ইউনিয়নের বাখরশাল ও খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকা দিয়ে প্রবল স্রোতে পানি ঢুকছে লোকালয়ে।
পৌর শহরে ডাইক উপচে পানি ঢুকছে। মাইজকান্দি গ্রামের কাছে ডাইকের একটি অংশ নদীতে ধসে পড়েছে। ছবড়িয়া, সেনাপতিরচক, ইছাপুর, পিল্লাকান্দি, আমলশিদসহ উপজেলার অন্তত ৫০টি স্থানে পানি ডাইকের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জকিগঞ্জ শহরের এক বীমা কর্মকর্তা সুরঞ্জন মল্লিক জানান, পৌর শহরের প্রধান সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। দোকান-পাটে পানি ঢুকে পড়েছে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের সার্বক্ষণিক নজরদারি আছে। কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে এখনও কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেনি।’
বর্তমানে নদীর পানি ক্রমাগত বাড়তে থাকায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয়রাও নিজ উদ্যোগে বাঁধ রক্ষায় বালু ভর্তি বস্তা ফেলে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, ‘বরাক থেকে কুশিয়ারার প্রবেশ মুখে অর্থাৎ অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার প্রায় দুই মিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই এলাকায় ডাইক উপচে পানি প্রবেশ করছে। পানির স্রোতে কোথাও কোথাও ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি কমলে ডাইকগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’