শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ২৫ মে, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, শেখ হাসিনা আর কখনো দেশে ফিরে আসবে না।
তিনি বলেন, ‘আমি এখন এখানে বক্তব্য রাখছি, আর এ সময়ে ঢাকায় একটি ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা এখনই প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল, মত পার্থক্যের ঊর্ধ্বে ওঠে সিদ্ধান্ত নেই যে, এই সরকারকে আমরা সফল করে তুলবো।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আজ দুপুরে জেলার বাঁশখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে আয়োজিত এক পথ সভায় একথা বলেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যখন বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনী রোড ম্যাপের আলোচনা এগিয়ে যায়, তখনই আমরা দেখি ষড়যন্ত্র ও দেশ বিরোধী চক্রান্ত মাথা ছাড়া দিয়ে ওঠে। যতই ষড়যন্ত্র হোক, যতই চক্রান্ত হোক না কেন- প্রিয় বাঁশখালীবাসী, আপনারা লিখে রাখেন যে শেখ হাসিনা আর কখনো ফিরে আসবে না। আপনারা সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলা করবেন না। আপনারা নিজেরা নিজেরা মিলে নিজেদের বিকল্পহীন মনে করবেন না। হাসিনা নিজেকে নিজে বিকল্পহীন মনে করতো। আমরা জনগণ বিকল্প খুঁজে নিয়েছি। সচিবালয়ে বসে এখনও যারা সরকারকে অসহযোগিতা করছেন, আপনাদের বিকল্প আমরা জনগণ ঠিক করে নেবো। দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পাশ করা অনেক উচ্চশিক্ষিত যুবক রয়েছে। প্রয়োজনে তারা আপনাদের স্থলাভিষিক্ত হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন, হাসিনার রাজত্ব আবার কায়েম হবে, তাহলে আপনারা ভুল পথে রয়েছেন। আপনারা ষড়যন্ত্র না করে দেশের স্বার্থে বিচার, সংস্কার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যান। দেশের লুটপাট, গুম ও খুনকে বিগত সরকার নাম দিয়েছিল উন্নয়ন। দাড়ি-টুপিওয়ালা মানুষকে নির্যাতনের নাম দিয়েছিল সংস্কার। যে সরকার পালিয়ে যায়, সে সরকার আর কখনো ফিরে আসে না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যমকে আহ্বান জানাবো, আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন। বিগত সরকার স্বৈরাচারের মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছিল। তারা এস আলমের লুটপাটের বৈধতা উৎপাদন করেছিলো। আপনারা অপরাধের বৈধতা উৎপাদন করেছিলেন। আপনারা গুম খুনের বৈধতা উৎপাদন করেছিলাম। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা পাচারের বৈধতা উৎপাদন করেছিলেন। এখন তরুণ প্রজন্ম দেশের স্বার্থে দেশ রক্ষায় কাজ করবেন।’
এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা বলেন, ‘বাঁশখালী প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর। আপনাদের বাঁশখালীর অনেক কৃতি সন্তান এনসিপি’র গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তারা আপনাদের পাশে থাকবে। আমাদের যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ অনেক বাকী। আমরা আজকে আসছি এনসিপি’র পক্ষে থেকে। এনসিপি নতুন একটি দল। এ দলের স্বপ্ন অনেক বড়। আমাদের দেশের পচা ব্যবস্থা আমরা রাখতে চাই না। যে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দেশের মানুষ মারা যাচ্ছে, অন্ধ হচ্ছে, পঙ্গুত্ব বরণ করছে, সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় আমরা আর ফেরত যেতে চাই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে কোন সাধারণ নাগরিক ন্যায্য বিচার পাবে। কোন দলীয় বিবেচনায় তার বিচারকার্য ব্যাহত হবে না। নতুন বাংলাদেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য কোন পণ্যে পরিণত হবে না। সবার জন্য সুচিকিৎসা নিশ্চিত হবে নতুন বাংলাদেশে।’
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের স্বার্থে কাজ করে না, সব নিজের স্বার্থে কাজ করে। আমরা সেটা বদলে দিতে চাই।
ডা. তাসনিম বলেন, ‘এনসিপি কাজ করবে জনগণের স্বার্থে, এনসিপি কাজ করবে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে। এ কাজে আপনারা জনগণ আমাদের সাথে থাকবেন।’
এ সময় এনসিপি’র যুগ্ম সদস্য সচিব মীর এরশাদুল হক বলেন, দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল শুধু নিজের ধান্ধা-ফিকির ও পকেট ভারি করতে ব্যস্ত থাকে। দেশের গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে থাকার মন মানসিকতা কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দলের ভেতর আমরা দেখি না। আমি ঈদে যখন বাঁশখালী আসি, তখন দেখি আমার উপজেলার লবণ চাষিরা টাকার অভাবে ঈদ করতে পারছে না। লবণের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত। তখন আমি শুধু ৫০ জন শ্রমিক নিয়ে উপজেলা চত্বরে মানববন্ধন করি। এখন কিছুটা হলেও লবণের দাম বেড়েছে। আমি এভাবে আমার উপজেলার সাধারণ মানুষের মাঝে থাকতে চাই।
এনসিপি’র কেন্দ্রীয় সদস্য জাওয়াদুল করিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পথ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব সুজা উদ্দীন, নাহিদা সরোয়ার নিভা, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ডা. মাহমুদা আলম মিতু, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ, সংগঠক আরমান হোসাইন, আজিজুর রহমান রিজভী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ, চট্টগ্রাম অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক হাসান আরিফ ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দিন প্রমুখ।