শিরোনাম
ঢাকা, ৪ মে, ২০২৫ (বাসস): তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণ ও তামাকের ভয়াবহতা এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে জনসাধারণকে রক্ষার্থে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বৃদ্ধির জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন দেশের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালের ১৫০ জন চিকিৎসক।
আজ আহছানিয়া মিশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্কয়ার হাসপাতাল, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি হাসপাতাল ও ওয়েলফেয়ার হোম, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, আহ্ছানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতাল, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনে বিবৃতি প্রদানকারী উল্লেখযোগ্য ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ এ বিবৃতি দেন।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উদ্যোগে এক যৌথ বিবৃতিতে ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা বলেন, বিশ্বজুড়ে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সঙ্গেই তামাক জড়িত।
তামাক ব্যবহারের কারণে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি যেমন ক্যান্সার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, শ্বাসকষ্ট ও পায়ে পচন এবং খাদ্যনালিতে ক্যান্সারসহ নানা শারীরিক জটিলতা সম্পর্কে এখন আর কারো অজানা নয়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ডিপার্টমেন্ট অব পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স প্রণীত ট্রেন্ড অব টোবাকো ইউজ ইন বাংলাদেশ’ ফ্যাক্টশিট অনুসারে গ্যাটস ও স্টেপস, ২০০৯-২০২২ এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে বাংলাদেশে ২৫ থেকে ৬৯ বছর বয়সের ৪৭ শতাংশ মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করে থাকে। গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ধূমপান না করেও প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিভিন্ন পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও গণ পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন। আর পরোক্ষ ধূমপান প্রত্যক্ষ ধূমপানের মতোই সমান স্বাস্থ্য ক্ষতিকর। তামাক ব্যবহারের ফলে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, সিওপিডি বা ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ এবং অন্যান্য ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ১০৯ শতাংশ বেড়ে যায়। এ কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য মতে, গত পাঁচ বছরে (২০২০-২০২৪) বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৪৬৮ ডলার বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৩৮ ডলার। অথচ এসময়ে বেশিরভাগ সিগারেটের দাম হয় প্রায় অপরিবর্তিত থেকেছে অথবা সামান্য বেড়েছে। ফলে সিগারেটের প্রকৃত মূল্য কমে গেছে। এতে করে সিগারেট অধিক সহজলভ্য হয়ে পড়ছে। এবছরের জানুয়ারি মাসে অন্তর্বর্তী সরকার সিগারেটের সকল সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ করেছে যা ইতিবাচক পদক্ষেপ। এতৎসত্ত্বেও নিম্ন ও মধ্যম স্তরের সিগারেটের মূল্য সহজলভ্যতার মধ্যেই রয়ে গেছে।