শিরোনাম
ঢাকা, ১ মে, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা শ্রমশক্তির অংশ হলেও প্রায়শই অন্যান্য শ্রমিকদের ভোগ করা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হন।
তিনি বলেন, ‘বেশিরভাগ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদের মজুরি বোর্ড অনুযায়ী বেতন দেয় না। তবুও গণমাধ্যমগুলো মিথ্যা দাবি করে যে, বিজ্ঞাপন পাওয়ার জন্য তারা মজুরি বোর্ড অনুযায়ী বেতন দিচ্ছে। এই প্রতারক মালিকদের বিরুদ্ধে ইউনিয়নকে সক্রিয় হতে হবে।’
মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএফইউজে এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই সাংবাদিক নেতা আজ এসব কথা বলেন।
কাদের গণি বলেন, ‘আধুনিক সভ্যতা শ্রমিকদের রক্ত, ঘাম এবং শ্রমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। তবুও এই শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত এবং স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত।’
‘আমাদের সুউচ্চ ভবনের প্রতিটি ইট শ্রমিকদের ঘামে স্থাপিত। এমনকি প্রতীকী তাজমহলও শ্রমিকদের পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে,’ তিনি সমাজের এমন একটি দ্বন্দ্ব তুলে ধরে বলেন, যেখানে শ্রমিকদের দ্বারা নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভগুলো উদযাপন করা হয় কিন্তু এখনও তাদের প্রান্তিক করে রাখা হয়।
তিনি ক্রমবর্ধমান শ্রেণি বিভাজনের উপর আলোকপাত করে বলেন, ‘আজকের সমাজ শ্রমিক ও মালিকের মধ্যে বিভক্ত। যাদের টাকা আছে তাদের মালিক হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং যাদের টাকা নেই তারা শ্রমিক শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত, কিন্তু প্রকৃত অর্থে উভয়ই সমাজের জন্য কাজ করে। তবুও যারা মালিক তারা এটি স্বীকার করে না।’
বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীনের সভাপতিত্বে, সিনিয়র সাংবাদিকগণ আলোচনায় অংশ নেন।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য উদ্ধৃত করে চৌধুরী বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কারণে প্রতি ১৫ সেকেন্ডে একজন শ্রমিক মারা যায়। ফলস্বরূপ, বিশ্ব অর্থনীতি সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে যার ফলে প্রতি বছর তার জিডিপির ৪ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধু ২০২৩ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৪৩২ জন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৫০২ জন আহত হয়েছেন। ২০২৫ সালের প্রথম দুই মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ জন শ্রমিক মারা গেছেন কিন্তু নিয়োগ কর্তারা ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের পাশে দাঁড়াননি।