বাসস
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৭:০৯
আপডেট : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:০৯

জয় দিয়ে আফগানিস্তানের সাথে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ

ঢাকা, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ (বাসস) : সরাসরি ২০২৩ বিশ^কাপের টিকিট পেতে আরো  এগিয়ে যেতে জয় দিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে আগামীকাল অনুষ্ঠিত হবে প্রথম ওয়ানডে। 
ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টস চ্যানেল।
আফগান সিরিজের পর তিন ম্যাচের ওয়ানডে খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবে টাইগাররা। তবে তার  আগে এই তিন ম্যাচের বাংলাদেশের ৩০ পয়েন্ট প্রয়োজন এবং কেননা দক্ষিণ আফ্রিকায় অন্তত একটি ম্যাচ জেতা তাদের জন্য নি:সন্দেহে অনেক বেশি কঠিন হবে।
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চারটি সিরিজে ১২টি ম্যাচ খেলে আটটিতে জিতেছে।
জিম্বাবুয়ে ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অ্যাওয়েতে দু’টি সিরিজ খেলেছে টাইগাররা। জিম্বাবুয়েকে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করলেও, নিউজিল্যান্ডের কাছে তিন ম্যাচই হারে তারা। ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করলেও, শ্রীলংকাকে ২-১ ব্যবধানে হারায় টাইগাররা।
বর্তমানে ৮০ পয়েন্ট নিয়ে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের দ্বিতীয় স্থানে আছে বাংলাদেশ। বড় দলগুলি এখনও বেশি ম্যাচ না খেলায়  আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ থেকে ৩০ পয়েন্ট ভালো অবস্থানে রাখবে বাংলাদেশকে। এমনকি ১০ পয়েন্ট বা একটি ম্যাচ হারলেও তারা ব্যাকফুটে চলে যাবে।
তবে ঘরের মাঠে  ওয়ানডে ক্রিকেটে  বাংলাদেশ সব সময়ই কঠিন দল হলেও কাজটি মোটেই সহজ হবে না।
দুই দলের মধ্যে হেড টু হেড লড়াইয়ে আট ম্যাচের মধ্যে ৫-৩ ব্যবধানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। আফগানদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ নিজেদের সর্বশেষ দু’টি ম্যচে ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে ৩ রানে এবং ২০১৯ বিশ্বকাপে ৬২ রানে জিতেছে। কিন্তু আফগানদের কাছে হারলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়তে হয় বিধায় বাংলাদেশকে প্রতিবারই এশিয়ান প্রতিন্দ্বন্দিদের বিপক্ষে খেলার সময় চাপে থাকতে হয় ।
আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগে এখনও অপরাজিত আফগানিস্তান। ৬ ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই জিতেছে তারা। তবে আফগানদের সিরিজগুলো ছিলো র‌্যাংকিংয়ের নিচের  সারির দল আয়ারল্যান্ড এবং নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। পয়েন্ট টেবিলের ষষ্ঠ স্থানে থাকলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয় অনেক এগিয়ে নিবে আফগানিস্তানকে।
আজ বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল বলেন, ‘আমরা জয় দিয়ে শুরু করতে চাই, এটি আমাদের লক্ষ্য। আমরা সব সময়ের মতো তিনটি ম্যাচের কথা ভাবছি না, আমরা ম্যাচ  বাই ম্যাচ এগিয়ে যেতে চাই।’
সিরিজের উত্তেজনা বিবেচনা করে, কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিতে গত ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছে এক সপ্তাহ আগ থেকেই অনুশীলন শুরু করেছে আফগানিস্তান। সিরিজের আগে সিলেটে অনুশীলন ক্যাম্প করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আফগান ক্যাম্পে কোভিড-১৯ থাবায়, এক সপ্তাহের অনুশীলনে বাধা পড়েছিলো। তাই অনুশীলনের জন্য তিন দিন সময় পেয়েছে আফগানরা।
তবে  আফগানিস্তানের  কয়েকজন  খেলোয়াড় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও (বিপিএল) খেলেছে, যা থেকে তারা  কিছুটা সুবিধাও পাচ্ছে।
তবে আফগান  স্পিন মোকাবেলার ওপড় নির্ভর করবে  বাংলাদেশের  সাফল্য।  টাইগার দলের  জন্য বড় হুমকি দুই স্পিনার রশিদ খান এবং মুজিব উর রহমানের বোলিং। বিপিএলে বেশিরভাগ বাংলাদেশি খেলোয়াড় মুজিবকে সাচ্ছেন্দ্যে খেলতে পারেনি। তাকে খেলতে হিমশিম খেতে হয়েছে  দেশের ক্রিকেটারদের। অন্যদিকে, হোম বা অ্যাওয়ে কন্ডিশনে রশিদকে খেলা বাংলাদেশের জন্য সব সময়ই কঠিন। 
তামিম বলেন, ‘আমরা জানি তাদের বিশ্বমানের স্পিনার আছে, কিন্তু আমরা আমাদের এই লড়াইয়ে এগিয়ে থাকতে চাই। তাদের তিনজন স্পিনার আছে, যারা ৩০ ওভার বল করবে, কিন্তু আমাদের পরিকল্পনা হল পুরো ৫০ ওভার ভাল খেলা।’
এ ক্ষেত্রে পেস সহায়ক হওয়ায়  চট্টগ্রামের পিচ বাংলাদেশের জন্য  সহায়ক হতে পারে। যা ঢাকার শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উল্টো। কেননা ঢাকার পিচ সব সময়ই   স্পিন সহায়ক।
স্পিনার ছাড়াও আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজে খেলাটা টাইগারদে জন্য কঠিন হবে। কেননা  দীর্ঘ দিন যাবত ওয়ানডের বাইরে আছে বাংলাদেশ। গত জুলাইয়ে  জিম্বাবুয়ের  বিরুদ্ধে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। 
তামিম বলেন, ‘এখানে প্রত্যেকেই পেশাদার, তাই তারা জানে কিভাবে দীর্ঘদিন পর খেলতে হয়। তবে যে বিষযটি আমাকে উত্তেজিত করেছে, তা হল- আমি অধিনায়কত্ব পাবার পর প্রথমবারের মতো আমরা আমাদের পুরো শক্তির স্কোয়াড পাচ্ছি।’
বাংলাদেশ দল : তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, এবাদত হোসেন, নাসুম আহমেদ, ইয়াসির আলি চৌধুরি ও মাহমুদুল হাসান জয়।
আফগানিস্তান দল : হাশমত শাহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ (সহ-অধিনায়ক), আজমত ওমরজাই, ফরিদ আহমাদ, ফজল হক ফারুকি,  রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রিয়াজ হাসান, নাজিব জাদরান, শহিদ কামাল, ইকরাম আলিখিল, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, ইয়ামিন আহমেদজাই ও মালিক।