ঢাকা ১৬ জানুয়ারি, ২০২২ (বাসস) : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বৈশ্বিক জ্বালানি চ্যালেঞ্জ নির্ভরযোগ্যভাবে সমাধান করতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাও বাড়ানো প্রয়োজন। সাশ্রয়ী মূল্যে আধুনিক ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী ১৫ জানুয়ারি রাতে ‘ইন্টারন্যাশনাল রিনিউয়েবল এনার্জি এজেন্সি’র ১২তম অ্যাসেম্বলি’তে বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সীমিত সম্পদ নিয়েই বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ৬ মিলিয়নেরও বেশি সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে গ্রিড নেটওয়ার্কের বাইরে ২০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয়েছে।
এছাড়াও ২৬ টি মিনিগ্রীডের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রীডমানের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০০০-এরও বেশি সৌর সেচ ব্যবস্থা এখন কাজ করছে যা উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ডিজেল খরচ কমিয়েছে। এখন পর্যন্ত ২৩১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৮টি সোলার পার্ক গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। দেশে স্থাপিত ক্ষমতার সৌর বিদ্যুৎ প্রায় ৬৫০ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কৃষি বা অন্যান্য ব্যবহারের জন্য জমির প্রতিযোগিতামূলক চাহিদার কারণে বড় আকারে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা বাংলাদেশের জন্য বেশ দুষ্কর। ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তির সম্ভাবনা এবং ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের মত বিকল্প ব্যবস্থা অন্বেষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ছাদে সোলারকে উৎসাহিত করার জন্য নেট মিটারিং নির্দেশিকা চালু করেছে। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সৌর শক্তির পাশাপাশি বায়ু শক্তি, বর্জ্য হতে বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সম্ভাবনা অন্বেষণ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ২৪৫ মেগাওয়াট বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের একটি ডাম্পিং সাইটে ৪২.৫ মেগাওয়াট ‘ওয়েস্ট টু এনার্জি’ প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সিটি কর্পোরেশন এবং পৌরসভা জুড়ে। একই রকম ‘ওয়েস্ট টু এনার্জি’ প্ল্যান্ট পর্যায়ক্রমে তৈরি করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বৃহৎ আকারে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সমুদ্রের দিকে নজর দেয়ার সময় এসেছে। আইআরইএনএ (IRENA) উন্নয়নশীল দেশগুলোর সমুদ্রে বায়ু শক্তির সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করতে সহযোগিতা করলে দৃশ্যমান ফল পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ-এর সভাপতিত্বে মেম্বার ইনটার ভেনসান (Member Interventions) সেশনে জিম্বাবুয়ে, কলোম্বিয়া, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এল সাল্বেদর, বেলজিয়াম, নরওয়ে, উরুগুয়ে, কানাডা, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, গ্রীস, স্পেন, চীন, জাপান, সুইজারল্যান্ড, ক্রোসিয়া, তারকমিনিস্থান, সার্বিয়া, জার্মানী, ফ্রান্স, ইটালী, সান মারিনো ও সৌদি আরবের প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।