শিরোনাম

ঢাকা, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ক্ষণজন্মা দেশপ্রেমিক ও প্রকৃত অর্থেই রাষ্ট্র নির্মাতা।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান তাঁর জীবনের পুরো সময় দেশ ও মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে তিনি কৃষি, শিল্প, অর্থনীতি, সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ সব ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর প্রথম মন্ত্রিসভা ‘গ্যালাক্সি অব ইন্টেলেকচুয়ালস’ হিসেবে পরিচিত ছিল, যেখানে দেশের শ্রেষ্ঠ মেধাবীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন, যোগ্য, জ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ মানুষদের নিয়ে দেশ এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
আজ সোমবার দুপুরে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, উন্নয়ননীতি ও ফারাক্কা চুক্তিতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান নিয়ে এক প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিকে টেনে তুলে সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। পশ্চিমা বিশ্ব, চীন, ভারত ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তাঁর দূরদৃষ্টি ছিল অনন্য।
১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, সে সময় সংসদে সব মত ও আদর্শের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল, যা একটি সমঝতাভিত্তিক ও জ্ঞানসমৃদ্ধ সংসদের উদাহরণ।
জিয়াউর রহমান ছিলেন জন্মগত নেতা উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তাঁর সততা ও শৃঙ্খলা কিংবদন্তির মতো। দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন। তাঁর জীবনাচরণ, ব্যক্তিগত নজরদারি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, যারা বাংলাদেশকে চায়নি, তারাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করেছিল। আজও সেই শক্তি নতুন সম্ভাবনাকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদের দর্শনই বাংলাদেশের মূল ভিত্তি। এটিকে ধারণ করেই সামনে এগোতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব সবাইকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, মাথা উঁচু করে সামনে এগিয়ে যাওয়াই হবে শহীদ জিয়াউর রহমানের প্রতি সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা।
অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন নেশন বিল্ডার। আগামীতে এ রকম অসামান্য চিন্তক এদেশে জন্ম নিবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাঁর অকাল মৃত্যু ছিল আমাদের জন্য অভাবনীয় ক্ষতি।
তিনি বলেন, কোনো কিছুর সমস্যা তখনই হয়, যখন আমরা জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করি। জিয়াউর রহমান সব সময় এসবের বিরোধিতা করেছেন। তিনি দল মত নির্বিশেষে যোগ্যতা ও সততাকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে কোনো একক গোষ্ঠীর অবদান ছিল না। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের সম্মিলিত রূপ ছিল এই গণঅভ্যুত্থান, যা আমাদের সবাইকে একই ছাতার নিচে নিয়ে এসেছিল।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান শুধুই সেনা শাসক ছিলেন না, তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন।