বাসস
  ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:১৫

মালামাল পরিবহনে রেল ও নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা

আজ ঢাকায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আয়োজনে সড়ক ভবন মিলনায়তনে এক অংশীজন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। ছবি: বাসস

ঢাকা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, মালামাল পরিবহনে সড়কের বিকল্প হিসেবে রেল ও নৌপথের ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিকেন্দ্রীকরণ নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক বা বাণিজ্যিক স্বার্থে সড়ককে গুরুত্ব দিতে গিয়ে সস্তা রেল ও নদী পথকে উপেক্ষা করেছি। আমাদের রেল ও নদী পথকে ঢেলে সাজাতে হবে। মালামাল পরিবহনে সড়ক পথের বিকল্প হিসেবে রেল ও নদী পথের অধিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

জাতীয় সমন্বিত বহুমুখী পরিবহন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের চলমান উদ্যোগের অংশ হিসেবে আজ ঢাকায় একটি অংশীজন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের আয়োজনে সড়ক ভবন মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. শেখ মইনউদ্দিন। এতে সভাপতিত্ব করেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সমন্বিত ও টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জাতীয় সমন্বিত বহুমুখী পরিবহন মাস্টার প্ল্যান সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকেন্দ্রীকরণ ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। মালামাল পরিবহনে রেল ও অভ্যন্তরীণ নৌপথকে কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে পারলে পরিবহন ব্যয় কমবে এবং পরিবেশের ওপর চাপও হ্রাস পাবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, পরিবহন খাতে সমন্বয়ের অভাবে কৃষি ও পরিবেশসহ অন্যান্য খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ক্ষতি এড়াতে সরকার সমন্বিত যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। 

তিনি বলেন, ন্যাচারাল হাইওয়ে বাধাগ্রস্ত না করা, একক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নির্ভরতা কমানো এবং তথ্য-উপাত্তনির্ভর পরিবহন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য।

সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকারি সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, বন্দর ও টার্মিনাল কর্তৃপক্ষ, বেসরকারি খাত, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ সংগঠন এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। 

উপস্থাপনায় মাস্টার প্ল্যানের বেসলাইন অ্যাসেসমেন্ট স্টাডি ও কৌশলগত রোডম্যাপ তুলে ধরা হয়, যেখানে সড়কের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা, যানজট, নিরাপত্তা ঝুঁকি, উচ্চ লজিস্টিক ব্যয় এবং রেল ও নৌপথের অপর্যাপ্ত ব্যবহারের মতো চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা হয়।

উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা প্রাতিষ্ঠানিক সমন্বয় জোরদার, করিডোর অগ্রাধিকার নির্ধারণ, লাস্ট-মাইল সংযোগ, পরিবেশগত স্থায়িত্ব ও দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

সেমিনারের শেষে সিদ্ধান্ত হয়, অংশীজনদের মতামত ও সুপারিশসমূহ মাস্টার প্ল্যানের পরিমার্জনে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, যা একটি পূর্ণাঙ্গ, সমন্বিত ও বাস্তবায়নযোগ্য জাতীয় সমন্বিত বহুমুখী পরিবহন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নে সহায়ক হবে।