শিরোনাম

ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো জোরদার করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দুই দেশের হাইকমিশনার।
সম্প্রতি মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম এবং দেশটিতে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার নিক লো’র মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়।
উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত বৈঠকে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও গঠনমূলক কূটনীতির প্রতি তিন দেশের গভীর অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। গতকাল বুধবার মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বৈঠকে উভয় দেশের হাইকমিশনার বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য এবং মালদ্বীপের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও ত্রিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন।
বিশেষ করে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন, আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির মতো পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তারা মতবিনিময় করেন।
যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার নিক লো মালদ্বীপে তার কূটনৈতিক মিশনের অগ্রাধিকার, লক্ষ্য ও কার্যক্রমের দিকগুলো তুলে ধরেন। এ প্রসঙ্গে তিনি ঢাকায় তার পূর্ববর্তী কূটনৈতিক দায়িত্বকালের স্মৃতিচারণ করে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, জনগণের আতিথেয়তা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
এ সময় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. মো. নাজমুল ইসলাম মালদ্বীপের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
তিনি মালদ্বীপের বিভিন্ন খাতে নিয়োজিত বাংলাদেশি শ্রমিক ও পেশাজীবীদের ভূমিকা গুরুত্ব সহকারে উল্লেখ করেন এবং তাদের কল্যাণ, নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে নিরাপদ, নিয়মিত ও সুশৃঙ্খল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করতে মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
উভয় পক্ষই একমত হন যে, কার্যকর শ্রম ব্যবস্থাপনা এবং মানব নিরাপত্তা টেকসই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এক্ষেত্রে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের অধিকার ও কল্যাণ সুরক্ষা নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
দুই দেশের হাইকমিশনার মালদ্বীপের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যৌথ সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচির সম্ভাবনার দিকগুলোও পর্যালোচনা করেন। তারা মনে করেন, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব।
উভয় পক্ষই কমনওয়েলথের অভিন্ন মূল্যবোধের প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বহুপাক্ষিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তারা সংলাপ, অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতামূলক কূটনীতির মাধ্যমে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।
বৈঠক শেষে উভয় হাইকমিশনার আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য ও মালদ্বীপের মধ্যে ধারাবাহিক কূটনৈতিক যোগাযোগ এবং ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা একটি শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ অঞ্চল গঠনে যৌথ লক্ষ্যগুলোকে আরো শক্তিশালী করবে। তারা পারস্পরিক স্বার্থে প্রয়োজন অনুযায়ী ভবিষ্যতেও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।