বাসস
  ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৪
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৩০

ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসে অব্যাহত সমর্থন প্রধান উপদেষ্টার 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ২৫ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবসে অব্যাহত সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। 

আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।  

প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগ দিয়ে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং কার্যকর রাষ্ট্র গঠনের জন্য দেশটির জনগণের স্বকীয়তার অবিচ্ছেদ্য অধিকার বাস্তবায়নের প্রতি অবিচল ও অটল প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছেন, যার রাজধানী হবে পূর্ব জেরুজালেম।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা আত্ম-নিয়ন্ত্রণ এবং রাষ্ট্রের জন্য তাদের ন্যায্য সংগ্রামে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরাইলের মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের পরিকল্পিত ও গুরুতর লঙ্ঘনের নিন্দা জানাতে প্রতিটি আয়োজনে আমাদের আওয়াজ উত্থাপন করেছি। বিশেষ করে ফিলিস্তিনে নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যা, হাসপাতাল ও স্কুলে নির্বিচারে আক্রমণ, সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি, ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুতি এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবৈধভাবে উচ্ছেদ ও দখল এযাবৎকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই ন্যায্য বিষয়ের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে গভীরভাবে প্রোথিত।

গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যেখানে তরুণ-নেতৃত্বাধীন আন্দোলন আমাদের বৈষম্যবিরোধী, স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবিক মর্যাদা এবং নিপীড়ন ও অত্যাচারের মাধ্যমে শোষণকারী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যের কণ্ঠস্বর দেখিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এই চেতনায় আমরা গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি অর্জন, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং অবশেষে যুদ্ধের অবসানের জন্য চলমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে চলমান কূটনৈতিক উদ্যোগের মধ্যে ইসরাইলি দখলদার বাহিনীর দ্বারা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের খবরে আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমরা আশা করি, যুদ্ধে ইসরাইলকে সমর্থনকারী দেশগুলো তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।

তিনি বলেন, আমরা ইসরাইলি প্রতিনিধি পরিষদের পশ্চিম তীরের ওপর তথাকথিত ‘ইসরাইলি সার্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা জানাই, তাদের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং প্রাসঙ্গিক জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর স্পষ্ট লঙ্ঘন। আমাদের আইসিসি এবং আইসিজে-তে ন্যায়বিচার এবং জবাবদিহিতা প্রক্রিয়ার সঙ্গেও যুক্ত থাকতে হবে, যা ইসরাইল কর্তৃক সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং গণহত্যা সম্পর্কিত মামলাগুলোর বিচারের জন্য অপরিহার্য।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এ বছর বেশ কয়েকটি দেশের আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই এবং শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে আছি। আমরা আশা করি—যেসব দেশ এখনো ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি, তারা শীঘ্রই তাদের স্বীকৃতি প্রদান করবে।

তিনি বলেন, এই দিনে আমরা পুনর্ব্যক্ত করছি যে, এই অঞ্চলে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির একমাত্র উপায় হলো দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন এবং প্রাসঙ্গিক জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়া। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে তাদের সংহতি প্রকাশ করতে হবে।