শিরোনাম

ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে উড়োজাহাজ সরবরাহে ইউরোপের বিমান নির্মাতা কোম্পানি এয়ারবাসের প্রস্তাবের প্রতি যৌথভাবে সমর্থন জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি এবং যুক্তরাজ্যের দূতরা।
ইউরোপীয় দূতরা এ প্রস্তাবকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহর শক্তিশালীকরণ এবং বাংলাদেশের বিমান পরিবহন সংক্রান্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের একটি পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ঢাকায় নিযুক্ত চারটি মিশনের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার জোর দিয়ে বলেন, বিমানের বর্তমান বহরের পাশাপাশি এয়ারবাসের বিমান যুক্ত করা হলে জাতীয় পতাকাবাহী এ সংস্থার ‘ফ্লেক্সিবিলিটি, স্থিতিশীলতা এবং প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা’ বৃদ্ধি পাবে।
ঢাকায় ফরাসি দূতাবাসে ‘বাংলাদেশে বিমান পরিবহনের অগ্রগতিতে ইউরোপীয় সংলাপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শারলে, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার।
জ্যঁ-মার্ক সেরে-শারলে বলেন, আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে পারি, এয়ারবাসের প্রস্তাব চারটি ইউরোপীয় দেশের পূর্ণ সমর্থন পেয়েছে, যারা এই বহুজাতিক কোম্পানির অংশ। আমাদের নিজ নিজ এক্সপোর্ট ক্রেডিট এজেন্সিগুলো ইতোমধ্যে এই চুক্তিকে সমর্থন দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, ফ্রান্স এবং ইউরোপ বাংলাদেশের সামগ্রিক বিমান পরিবহন ব্যবস্থাকে সমর্থন দিতে দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ফরাসি রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সংযোগ চাহিদা এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় দেশটির একটি আঞ্চলিক বিমান চলাচল কেন্দ্র হয়ে ওঠার সব উপাদান রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, এয়ারবাস বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে একটি বিস্তৃত ও প্রতিযোগিতামূলক সমাধান উপস্থাপন করেছে, যা এই রূপান্তরকে সহায়তা করবে।
জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য ‘আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব বিমান’ প্রয়োজন এবং এয়ারবাস তা সরবরাহের জন্য যথাযথভাবে প্রস্তুত।
ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক বিমান চলাচল কেন্দ্র হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন দিতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব জোরদারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ইউরোপীয় দূতরা দীর্ঘমেয়াদি বিমান পরিবহন অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। এর মধ্যে রয়েছে পাইলট ও প্রকৌশলীদের প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম এবং শিল্প দক্ষতা হস্তান্তর, যা বিমানের পরিচালন সক্ষমতা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে সহায়ক হবে।
এয়ারবাসের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের মার্কেটিং প্রধান মনাল শেশ এবং কমার্সিয়াল সেলস ডিরেক্টর রাফায়েল গোমেজ নোয়া বাংলাদেশের বিমান পরিবহনের সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্লেষণমূলক আলোচনা তুলে ধরেন এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমানের আসন্ন বিমান ক্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাস- এই দুই বৈশ্বিক বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলমান রয়েছে।
বিমানের টেকনো-ফিনান্সিয়াল কমিটি বর্তমানে দুটি প্রস্তাব পর্যালোচনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে এয়ারবাসের ১০টি এ৩৫০ ওয়াইড-বডি এবং ৪টি এ৩২০নিও ন্যারো-বডি বিমান সরবরাহের প্রস্তাব এবং বোয়িংয়ের ১০টি ৭৮৭ ড্রিমলাইনার এবং ৪টি ৭৩৭ ম্যাক্স জেট সরবরাহের প্রস্তাব।