বাসস
  ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৫২

শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, জীবনের জন্য প্রস্তুত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য : শিক্ষা উপদেষ্টা

রোববার বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা । ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেছেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে আমরা লাইফ স্কিল, ভাষা শিক্ষা এবং পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছি। শিক্ষার্থীদেরকে শুধু পরীক্ষার জন্য নয়, জীবনের জন্য প্রস্তুত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য।'

বিশ্ব শিক্ষক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের জন্য মনোনীত গুণী ১২ জন শিক্ষককে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এবারের বিশ্ব শিক্ষক দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শিক্ষকতা পেশাঃ মিলিত প্রচেষ্টার দীপ্তি’ 

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, নির্ভুল ও মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে এবং এনসিটিবির বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চলমান। ইউজিসির কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে অংশীজনের সঙ্গে পরামর্শ ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে।

বিভিন্ন শিক্ষা কমিশনের সুপারিশ, শ্বেতপত্র ও টাস্কফোর্স রিপোর্ট পর্যালোচনা করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। অতিরঞ্জিত ফল প্রকাশ না করার নীতি গ্রহণের পাশাপাশি বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধা যাচাইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া চলমান। অনলাইন বদলি, ই-ফাইলিং, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও এডুটেকের মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন অব্যাহত রয়েছে। উচ্চশিক্ষায় অ্যাক্সেস টু গ্লোবাল নলেজ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ তৈরিতে কাজ করছি।’

নতুন করে প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা কথা উল্লেখ করে শিক্ষা উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, নতুন প্রতিষ্ঠানগুলোকে এমপিওভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। ব্যানবেজ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে উচ্চতর গবেষণার পথ উন্মুক্ত করা হয়েছে। এনটিআরসির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক ও প্রিন্সিপাল নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাতে, যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি শিক্ষকদের পদোন্নতি, মর্যাদা বৃদ্ধি, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বৃদ্ধি এবং আর্থিক প্রণোদনার উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন।

দুর্নীতি, অপ্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও অনিয়ম দমনে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় এসব অনিয়মের শ্বেতপত্র প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে, যা বর্তমানে কারিগরি সচিবের নেতৃত্বে চলমান।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের প্রধান ড. সুসান ভিজে এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসেসকোর মহাপরিচালক ড. সলিম এম আল মালিক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ট্রাডিশনালি শিক্ষকরা বিত্তবান ছিলেন না কিন্তু মর্যাদাবান ছিলেন। বেতন বৈষম্য চিত্র তুলে ধরে শিক্ষকদের মর্যাদা রক্ষায় শুধু কথা না বাস্তবিক অর্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার আহবাণ জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব জনাব রেহানা পারভীন।