বাসস
  ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:৩৩

সরকারি ক্রয় বিধি, ২০২৫ কার্যকর 

ঢাকা, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): সরকারি ক্রয়ে সুশাসন জোরদারকরণ এবং স্বচ্ছতা, দক্ষতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন প্রণীত পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস (পিপিআর), ২০২৫, গত ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।

২০২৫ সালের ১৬ নম্বর অধ্যাদেশের মাধ্যমে ২০০৬ সালের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্টে (পিপিএ), ২০০৬-এ গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনী আনা হয়েছে। সংশোধিত পিপিএ, ২০০৬-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের জন্য নতুন পিপিআর, ২০২৫ প্রণয়ন ও কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে দেশে সরকারি ক্রয় পরিচালনার ক্ষেত্রে সংশোধিত পিপিএ, ২০০৬ এবং নতুনভাবে প্রণীত পিপিআর, ২০২৫ উভয়ই যুগপৎভাবে কার্যকর হবে।

পিপিআর, ২০২৫-এ মোট ১৫৪টি বিধি ও ২১টি তফশিল অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আইন ও বিধিতে আনা প্রধান পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে: অভ্যন্তরীণ কার্য ক্রয়ে বিদ্যমান ১০ শতাংশ (প্লাস-মাইনাস) মূল্যসীমা বাতিল, সব ধরনের সরকারি ক্রয়ে ই-জিপি বাধ্যতামূলক, চুক্তি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রকৃত উপকারভোগী প্রকাশ বাধ্যতামূলক, টেকসই সরকারি ক্রয় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবর্তন, প্রতিটি প্রকিউরমেন্টে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়নের বাধ্যবাধকতা, ভৌত সেবাকে স্বতন্ত্র প্রকিউরমেন্ট ক্যাটাগরি হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান, ফ্রেমওয়ার্ক অ্যাগ্রিমেন্ট ও নেগোশিয়েশনস এর ক্ষেত্র সম্প্রসারণ, একটি ডিবারমেন্ট বোর্ড প্রতিষ্ঠা এবং সম্পদ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত সুস্পষ্ট বিধান।

পিপিআর, ২০২৫ প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরু হয় ২০২৫ সালের ৪ মে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ-এর গেজেট প্রকাশের পরপরই। বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) তখনই নতুন বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় যা ২০০৮ সালের পিপিআর প্রতিস্থাপন করেছে।

অন্তর্ভুক্তি ও কারিগরি উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে বিপিপিএ’র পরিচালনা পর্ষদ একটি টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ (টিডব্লিউজি) গঠন করে। যেখানে মন্ত্রণালয়সহ বৃহৎ ক্রয়কারী সংস্থার প্রতিনিধি, বিপিপিএ কর্মকর্তাবৃন্দ ও জাতীয় প্রকিউরমেন্ট প্রশিক্ষকরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। টিডব্লিউজি ৯টিরও অধিক সভায় বসে সংশোধনী বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে। পাশাপাশি, বিপিপিএ ১২টি বিস্তৃত পরামর্শ সভার আয়োজন করে। যেখানে ক্রয়কারী সংস্থা, দরদাতা, সাংবাদিক, উচ্চ পদস্থ নীতি-নির্ধারণী কর্মকর্তা, নারী উদ্যোক্তা ও উন্নয়ন সহযোগীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও ক্রয়কারী ও দরদাতাদের সাথে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

অধিকাংশ পরামর্শ সভায় অংশগ্রহণকারীরা সর্বসম্মতিক্রমে মত দেন যে, ২০০৮ সালের পিপিআর ব্যাপক সংশোধন না করে সম্পূর্ণ নতুন বিধিমালা প্রণয়ন প্রয়োজন।

অংশীজনদের এই পরামর্শ অনুসরণ করে বিপিপিএ পিপিআর, ২০২৫-এর চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে অনুমোদনের জন্য অর্থ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের নিকট উপস্থাপন করে।

এ প্রসঙ্গে বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘এটি সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রতিযোগিতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

বিপিপিএ’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও সচিব এস. এম. মঈন উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন বিধিমালা দেশের সরকারি ক্রয় সংস্কারের ইতিহাসে এক মাইলফলক।’