বাসস
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:১৩
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:২২

যেকোনো বিশৃঙ্খলা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ

আজ রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ সব কথা বলেন । ছবি : পিআইডি

ঢাকা, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বাসস) : শান্তি ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে পরাজিত ও পতিত শক্তি। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয় প্রশাসনকে যেকোনো অঘটন বা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় আরও সক্রিয় হওয়ার কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য আজ রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

পরে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

প্রেস সচিব বলেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ন্যূনতম ছাড় দেওয়া হবে না। সরকার মনে করে দেশের স্বার্থে জনগণসহ সকল রাজনৈতিক দলের ঐক্যবদ্ধ থাকা অপরিহার্য।’

প্রেস সচিব জানান,  বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘ডাকসু নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়, সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করতে হবে। পতিত ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তি যখন দেখছে দেশ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং জুলাইয়ের হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে জড়িতদের বিচার যত দ্রুততর হচ্ছে, তত তারা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এটি কেবল আইনশৃঙ্খলার সমস্যা নয়; এটি জাতীয় নিরাপত্তার ইস্যু। তারা দেশের সার্বিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার জন্য সকল শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন যে আসন্ন দুর্গাপূজায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে নানা রকম ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘গত বছরের দুর্গাপূজা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা ছিল। তাই এবছরও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে আগেভাগেই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

ব্রিফিংয়ে বলা হয়, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ধর্ম মন্ত্রণালয়কে দেশের সকল ধর্মভিত্তিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টা শীঘ্রই এসব সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে জুলাই হত্যাকাণ্ডের পর গড়ে ওঠা রাজনৈতিক ঐক্য পুনরায় দৃঢ় রাখার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে সম্পর্ক সুসংহত রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্বাচনের সময় কোথাও নিরাপত্তাজনিত কোনো অঘটন যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঝটিকা মিছিল ও বেআইনী সভা-সমাবেশ মনিটরিং জোরদার এবং যারা এর পেছনে সক্রিয়, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর উপস্থিত ছিলেন।