বাসস
  ০৬ আগস্ট ২০২৫, ১৮:১০
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২০:২২

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের আহ্বান আলী রীয়াজের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ

ঢাকা,  ৬ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দেশের গণমাধ্যম এখনও কর্পোরেট সত্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়নি মন্তব্য করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রিয়াজ আজ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের ওপর জোর দিয়েছেন।

তিনি এখানে এক সংলাপে বলেন, ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্পোরেট সত্তা হিসেবে আবির্ভূত হয়নি।’ 

ঢাকা-ভিত্তিক একটি থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজ (সিজিএস) এর আয়োজনে রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত সিরডাপ অডিটোরিয়ামে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সংলাপ: অভিযোগ ও স্ব-নিয়ন্ত্রণ অন্বেষণ’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান তাদের মালিকদের ব্যবসা-বাণিজ্য রক্ষা করার জন্য কাজ করে এবং এ কারণেই তারা মালিকদের তাৎক্ষণিক স্বার্থ রক্ষার পরিবর্তে ভালো কিছু করতে পারে না।

তিনি বলেন, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং দ্য গার্ডিয়ানের মতো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মালিকদের মানুষ সাধারণত চেনে না। কিন্তু বাংলাদেশের গণমাধ্যম মালিকদের সবাই চেনে।

অধ্যাপক আলী রিয়াজ বলেন, যতদিন সংবাদপত্রগুলো মালিকদের নামে চিনবে, ততদিন বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা অসম্ভব। 

সাংবাদিকদের আর্থিক সুবিধা সম্পর্কে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের কর্পোরেটাইজেশনের অভাবে তারা যথাযথ বেতন পাচ্ছেন না।

গণমাধ্যম কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় সাংবাদিক ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকার সমালোচনা করে ঐকমত্য কমিশনের ভাইস-চেয়ারম্যান বলেন, ইউনিয়নগুলো রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

সাংবাদিক ইউনিয়নগুলি ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকাও পালন করছে না। আবার রাজনৈতিক দলের ভূমিকাও পালন করছে না, তিনি বলেন।

দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন হচ্ছে না। তাই শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পর গণমাধ্যমের সম্পাদক এবং মালিকদেরও পরিবর্তন করা হচ্ছে।

এ সময় সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রযুক্তির উত্থান থামানো যাবে না ঠিকই, তবে এটিও সত্য যে বিশ্বাসযোগ্যতার কারণে মানুষ মূলধারার গণমাধ্যমের ওপর নির্ভর করে।

গণমাধ্যমের স্ব-নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে তিনি বলেন: ‘আমি কর্মনিয়ন্ত্রক কাঠামো পছন্দ করি না। কারণ এখানে নীতির প্রশ্ন রয়েছে।’

সিজিএসের সভাপতি জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে সংলাপে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মানব জমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্রের রেজওয়ানুল হক রাজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক এসএম শামীম রেজা, সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক পারভেজ করিম আব্বাসী, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমদ, বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা,  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি প্রার্থী এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) প্রাক্তন ফ্যাকাল্টি সদস্য আসিফ বিন আলী, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক কাজী জেসিন,বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদ নেওয়াজ খান এবং সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন।