বাসস
  ৩১ মে ২০২৫, ১৯:৩০

পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে: রিজওয়ানা

আজ পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় কথা বলেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: পিআইডি

ঢাকা, ৩১ মে, ২০২৫ (বাসস): পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সঙ্গে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণ থেকে প্রাপ্ত অভিযোগ ও আবেদনের উত্তর দিতে হবে; জনগণকে আশ্বস্ত করতে হবে; তাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রতিকারসহ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আজ ঢাকায় গ্রিন রোডের পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘পানি খাতে সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, এই বর্ষার সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয় জোনের প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊদ্ধতন প্রকৌশলীদের নিয়মিত মাঠে যেতে হবে। 

রিজওয়ানা জোনের প্রধান প্রকৌশলীদের মাঠ পর্যায়ে মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করার নির্দেশ দেন যাতে করে মানুষের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়া যায়।

পানি সম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন,  ‘আমরা আসন্ন বর্ষাকে সামনে রেখে একটা টাস্কফোর্স গঠন করতে চাই যেখানে পানি সম্পদ সচিবের নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি, এডিজি এবং সারাদেশের ৯টি জোনের নয়জন প্রধান প্রকৌশলী সমন্বয়ে একটা টাস্কফোর্স কাজ করবে। এই টাস্কফোর্স দেখবে এই বর্ষায় কোথায় কোথায় জরুরি ভিত্তিতে আমাদের যেতে হবে, জরুরি ভিত্তিতে কোথায় কোথায় কাজ  করতে হবে।’

তিনি বলেন, সারাদেশের  ৯টি জোনের নয়জন প্রধান প্রকৌশলীরদের মধ্যে থেকে যে প্রধান প্রকৌশলীর কাজ সবচেয়ে ভালো হবে এবং যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ থাকবে না; বর্ষা শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় তাকে পুরস্কার দেবে। একই সাথে নয় জোনের তরুণ প্রকৌশলীদের মধ্যে যে সবচাইতে ভালো কাজ করবে,  যার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ থাকবে না তাকেও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পুরস্কৃত করবে। 

হৃদয়ে ধারণ করে কাজ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘খুব সহসাই তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্ত করণের কর্মপরিকল্পনাটা চূড়ান্ত হয়ে যাচ্ছে; আমরা আশা করছি আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তুরাগ নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজটা শুরু করে দিতে পারবো। এক্ষেত্রে এডিবি তুরাগের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করে দিবে বলে আশ্বস্ত করেছে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু এবং শীতলক্ষ্যা এ চারটি নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের পরিকল্পনাটা আমরা চূড়ান্ত করে দিয়ে যাব যাতে পরের সরকার এসে এই নদীগুলো দূষণমুক্তকরণের কাজ এগিয়ে নিতে পারে।  

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলা থেকে ৬৪ টি নদী পরিষ্কারকরণের কর্মপরিকল্পনা আমরা এনেছি। তার থেকে ৭ বিভাগের সাতটি নদী,  কক্সবাজারের বাঁকখালি এবং ঢাকার চারপাশের চারটিসহ মোট ১২টি নদী দখল ও দূষণমুক্ত করণের পরিকল্পনা আমরা চূড়ান্ত করছি। এছাড়া  লবণদহ, হাড়িধোয়া এবং সুতাং এই তিনটি নদী দখল ও দূষণমুক্তকরণের কাজটি আমরা জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টফান্ড থেকে বরাদ্দ দিয়ে কাজ করা শুরু করে দেব।’

অনুষ্ঠানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড. শ্যামল চন্দ্র দাস দিবসের তাৎপর্য উল্লেখ করে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. তাহমিদুল ইসলাম। 

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) মিজানুর রহমান। 

আলোচনা অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড.আ.ন.ম বজলুর রশীদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রধানরা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত মহাপরিচালকরা, প্রধান প্রকৌশলীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।