শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত গণহত্যার বিচার, সামগ্রিক সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন ও পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি ‘বিস্তৃত রোডম্যাপ’ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
নাহিদ ইসলাম বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন-এই তিনটিরই রোডম্যাপ একসঙ্গে প্রকাশ করা উচিত। তাহলে জনমনে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের স্বস্তি ও আস্থার জায়গা তৈরি হবে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটি গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা- বিচার, সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর। এই সরকারের দায়িত্ব কেবল নির্বাচন আয়োজন করাই নয়, বরং জুলাই গণহত্যাসহ বিগত সরকারের আমলের অপরাধগুলোর বিচার এবং রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নেরও দায়িত্ব রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে দায়িত্বে থাকার এবং সকল দলের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
সকল রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীলভাবে কাজ করতে হবে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, জাতীয় নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য আমরা দায়িত্বশীলভাবে কাজ করব এবং আলোচনার মাধ্যমে সবকিছু সমাধান করব।
জুলাই ঘোষণাপত্রের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, সময় এগিয়ে যাচ্ছে এবং জুলাই ঘোষণাপত্রের সময়সীমা ঘনিয়ে আসছে। তাই, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এর ঘোষণা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
বিচার বিভাগের মাধ্যমে অতীতের বিতর্কিত নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার প্রচেষ্টা সম্পর্কে নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে বিরোধী দলগুলো প্রত্যাখ্যান ও অবৈধ ঘোষণা করেছে। আদালতের মাধ্যমে সেই নির্বাচনের বৈধতা চাওয়া আরো বিশৃঙ্খলা তৈরি করবে। তাই সেই নির্বাচন নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব করতে এবং গণতান্ত্রিক আস্থা পুনরুদ্ধার করতে আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।
শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই উপদেষ্টার বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে যোগ দিয়েছিলেন। আমিও তাদের সঙ্গে ছিলাম।
তিনি বলেন, তারা যদি রাজনীতি বা নির্বাচন করতে চান, তাহলে তারা সরকারে থেকে সেটা পারবেন না। তারা সেটা করতে চাইলে, সরকার থেকে বের হয়ে তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু তাদেরকে এনসিপি’র সঙ্গে সংযুক্ত করে এক ধরনের অপপ্রচার এবং তাদের হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা বলব, এটি খুবই উদ্দেশ্যমূলক। দুই ছাত্র উপদেষ্টাকে এনসিপি’র সঙ্গে সংযুক্ত করে যে অপপ্রচার হচ্ছে, আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে এনসিপি’র সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, সামান্তা শারমিন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।