বাসস
  ১৫ মে ২০২৫, ১৮:৩৩

অন্তর্বর্তী সরকার ও সংস্কার উদ্যোগে জাপানের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত

প্রতীকী ছবি

ঢাকা, ১৫ মে, ২০২৫ (বাসস): অন্তর্বর্তী সরকার এবং এর গৃহীত সংস্কার উদ্যোগের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে জাপান। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নেও অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে টোকিও।

টোকিওতে আজ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-জাপান পররাষ্ট্র দফতর পর্যায়ের ষষ্ঠ দফা পরামর্শ সভায় (এফওসি) এই আশ্বাস দেওয়া হয়। টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) রাষ্ট্রদূত ড. মো. নাজরুল ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষে এবং জাপানের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র বিষয়ক সিনিয়র ডেপুটি মন্ত্রী আকাহোরি তাকেশি সভায় নেতৃত্ব দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষ ২০২৪ সালের জুনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম দফা পরামর্শ সভার পরবর্তী অগ্রগতি পর্যালোচনা করে এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে।

সভায় চলতি মাসের শেষদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাপান সফর উপলক্ষে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের পণ্যের জন্য জাপানের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার বজায় রাখার অনুরোধে জাপান ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে।

বিবৃতিতে জাপান বাংলাদেশের ফল ও সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের বাজার প্রবেশাধিকার সহজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলেও জানানো হয়।

বঙ্গোপসাগর উদ্যোগ (বিগ-বি)’র আওতায় উন্নতমানের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে অধিকতর সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

টোকিও জাপানি উৎপাদন কারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে তাদের শিল্প মূল্যশৃঙ্খল সম্প্রসারণে উৎসাহিত করবে বলে জানানো হয়।

‘ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক’ এবং বিগ-বি উদ্যোগের নতুন পরিকল্পনার আওতায় জাপান এ অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায় বলেও জাপানি জানান কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশও জাপানের কাছ থেকে আরও বেশি পরিমাণে ওডিএ কনসেশনাল লোন, ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বৃদ্ধি এবং বাজেট সহায়তা চেয়েছে।

বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও খাতভিত্তিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জনগণের মধ্যে সংযোগ ও সাংস্কৃতিক বিনিময়, মিয়ানমারের  জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী, নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয়াবলি আলোচনায় ওঠে আসে।

এছাড়া মানবসম্পদ উন্নয়ন, জ্বালানি রূপান্তরে যৌথ ক্রেডিটিং ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ও ভূমিকম্প ব্যবস্থাপনা, ইটিপি, টিএসডিএফ, সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প, কৃষির যান্ত্রিকীকরণ এবং জাহাজ নির্মাণশিল্প আধুনিকায়নে সহযোগিতা নিয়েও আলোচনা হয়।

উভয় পক্ষ রাজনৈতিক আস্থা সুদৃঢ় করা, উন্নয়ন কৌশলকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং ‘কৌশলগত অংশীদারিত্ব’ পূর্ণভাবে বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়ে জাপান জানায়, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের জন্য মানবিক সহায়তাও অব্যাহত রাখবে।

উভয় পক্ষ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অগ্রাধিকারমূলক ইস্যুতে সহযোগিতা জোরদারে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।

পরামর্শক সভা দুই দেশের জনগণের উন্নয়নে সম্পদ, কৌশলগত অবস্থান এবং সক্ষমতার সর্বোত্তম ব্যবহারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে শেষ হয়।