শিরোনাম
ঢাকা, ১২ মে, ২০২৫, (বাসস) : জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী এবং গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতির সামনে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে।
আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে এনসিপি এ আহ্বান জানায়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যারা ১৯৭১ সালে এই জনপদের মানুষের জনযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, আমরা চাই তারা নিজেদের সুস্পষ্ট রাজনৈতিক অবস্থান জাতির সামনে ব্যাখ্যা করে জাতীয় সমঝোতা ও ঐক্যকে সুদৃঢ় করবে এবং চব্বিশের অভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়নে সহযোগী হবে।’
সম্প্রতি আওয়ামী লীগ ও এর কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী বিক্ষোভের সময় উত্থাপিত কিছু বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে আওয়ামী লীগের দলগত বিচারের বিধান যুক্ত করা, এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র জারি করার দাবিতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মত, পক্ষ এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করলেও একটি পক্ষ সচেতনভাবে দলীয় স্লোগান এবং বাংলাদেশের জনগণের ঐতিহাসিক সংগ্রাম বিরোধী স্লোগান দিয়েছে। যা জুলাই পরবর্তী সময়ে সাম্প্রতিক আন্দোলনে জাতীয় ঐক্য নবায়নের সুবর্ণ সুযোগ সৃষ্টিতে ব্যাঘাত ঘটিয়েছে।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘এনসিপি’র কোনো সদস্য সাম্প্রতিক আন্দোলনে দলীয় স্লোগান কিংবা এই জনপদের মানুষের সংগ্রাম ও ইতিহাসবিরোধী কোনো স্লোগান দেয়নি। ফলে যেসব আপত্তিকর স্লোগান নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, তার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পক্ষটিকেই বহন করতে হবে। এনসিপিকে এর সাথে জড়ানো সম্পূর্ণ অহেতুক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।’
বাংলাদেশের জনগণের সুন্দর ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের জন্য সকল পক্ষের প্রতি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানিয়ে বিগত ফ্যাসিবাদি জমানায় নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে এদেশের নাগরিকদের পক্ষে চব্বিশের অভ্যুত্থানে যারা ভূমিকা পালন করেছেন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাদেরকে আবশ্যিকভাবে ‘বাংলাদেশপন্থি’ ভূমিকা পালন করে যেতে হবে বলে জানিয়েছে দলটি।
সেই সঙ্গে, ১৯৪৭, ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংগ্রামের যথাযথ স্বীকৃতি দেশে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পূর্বশর্ত জানিয়ে দলটি আরো বলেছে, ‘এনসিপি মনে করে কোনো রাজনৈতিক দল বা পক্ষের পূর্বেকার রাজনৈতিক অবস্থান বা আদর্শের কারণে ইতোপূর্বের বিভাজন ও অনৈক্যের রাজনীতির সূত্রপাত ঘটলে, সংশ্লিষ্ট দল বা পক্ষের দায় রয়েছে বাংলাদেশের মানুষের সামনে নিজেদের সুস্পষ্ট অবস্থান ব্যাখ্যা করে জাতীয় ঐক্যের পথে হাঁটার। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যকার বৃহত্তর ঐক্যের মাধ্যমেই কেবল মুজিববাদকে সামগ্রিকভাবে পরাস্ত করা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করি।’
এদিকে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার সময়ে একটি পক্ষ আপত্তি জানালেও আন্দোলনকারীরা দৃঢ়তার সাথে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা অব্যাহত রাখে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।