বাসস
  ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:২৫
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ২০:১৯

বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষা সংরক্ষণ করার তাগিদ পার্বত্য উপদেষ্টার

বুধবার জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এনসিটিবি মিলনায়তনে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি ভাষায় প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, বিতরণ ও বাস্তবায়ন পর্যালোচনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। ছবি: বাসস

ঢাকা, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষাগুলোকে সংরক্ষণ করার জোর তাগিদ দিয়েছেন। 

তিনি বলেন, ইথারে ভেসে থাকা মানুষের কথা ও শব্দগুলো একসময় বিজ্ঞানীরা পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবেন। তাই আমাদের হারিয়ে যাওয়া ভাষাগুলোকে আবার পুনরুদ্ধার করতে হবে।

আজ বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের এনসিটিবি মিলনায়তনে ‘ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঁচটি ভাষায় প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, বিতরণ ও বাস্তবায়ন পর্যালোচনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন। 

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৪১টি ভাষা এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে। 

উপদেষ্টা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এমন কিছু সম্প্রদায় রয়েছে যার জনগোষ্ঠী অনেক কম। তাদেরও ভাষা আছে। যেমন- লুসাই, তাদের মোট জনগোষ্ঠী আড়াই হাজার। তাদের মাতৃভাষাও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।

তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের মানুষ এখন আর পিছিয়ে থাকতে চায় না। পার্বত্য চট্টগ্রামে কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে হবে। আপাতত প্রি-প্রাইমারি থেকে ক্লাস থ্রি পর্যন্ত শুরু করা হবে। পরে উপজেলা পর্যায়ে দুর্গম এলাকার ছাত্রছাত্রীদের জন্য হোস্টেলে থাকার ব্যবস্থা করে কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিত করতে চায় সরকার।

উপদেষ্টা বলেন, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানে দক্ষ শিক্ষকদের একটি উপজেলার ৮ থেকে ৯টি বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে পাঠদান ও পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। দ্বিতীয় এজেন্ডা হলো জীবিকার উন্নয়ন, পার্বত্য অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটানো। আর আমার তৃতীয় এজেন্ডা হলো পরিবেশ।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) মো. মনিরুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মডারেটর মাসুদ আকতার খান, এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান প্রফেসর রবিউল কবীর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন এনসিটিবি’র ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল মুমিন মোছাব্বির।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য চাকমা ভাষার ৯৩ হাজার ১৬২টি, মারমা ভাষার ৪৫ হাজার ২১৯টি, ককবরক ভাষার ৩৫ হাজার ৫৬০টি, সাদরি ভাষার ৩ হাজার ৮৪৬টি এবং গারো ভাষার ১৫ হাজার ৩৮টিসহ সর্বমোট ১ লাখ ৯২ হাজার ৮২৫টি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ এবং সরবরাহ করা হয়েছে। 

কর্মশালায় মাতৃভাষা ভিত্তিক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে মুদ্রণ ও বিতরণ, মাঠ পর্যায়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের শিখন কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর অন্যান্য ভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।