শিরোনাম
ঢাকা, ৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের ‘কার্টার সেন্টার’-এর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকাল ১০টায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনৈতিক অবস্থা, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সংসদ নির্বাচনসহ নানা বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।
ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠকের পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুইটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একটি হচ্ছে, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, গণতন্ত্রায়ণ।’
তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্টভাবে তারা (কার্টার সেন্টারের প্রতিনিধি দল) যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছেন সেটা হচ্ছে নির্বাচনে তারা হয়ত মনিটরিং করতে আসতে পারেন। যদি সেটা হয় সেটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে এবং সেটা কখন, মূলত এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
কার্টার সেন্টারের ডেমোক্রেসি প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর জোনাথন স্টোনস্ট্রিট ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন, সিনিয়র অ্যাসোসিয়েট ডাইরেক্টর তারা শরিফ, মাইকেল বালদাসারো, সাইরাহ জাহেদি, ড্যানিয়েল রিচার্ডস ও কাজী শহীদুল ইসলাম।
বিএনপি মহাসচিবের সাথে ছিলেন, আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং দলের চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার।
কবে নাগাদ নির্বাচন হতে পারে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে ড. মঈন খান বলেন, ‘দেখুন আমি কারো সমালোচনা করতে চাই না। একটা ছোট উদাহরণ দিচ্ছি, বাংলাদেশের ইতিহাসে যেটি হয়েছে, আমি তাদেরকেও বলেছি, আমরা এরশাদের পতনের সময় দেখেছিলাম একটি কেয়ারটেকার সরকার এবং সেটাও কিন্তু একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার। সেই সরকারটাও কিন্তু ৯০ দিনের মাথায় বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছিলো এবং আজকে পর্যন্ত বাংলাদেশের কেউ কিন্তু সমালোচনা করে না।’
‘কাজেই এটা বুঝতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে গেলে যে সুনির্দিষ্ট কোনো সময়সূচি নিতে হবে তার কোনো যৌক্তিকতা নেই। নির্বাচন ৯০ দিনের মধ্যে করা সম্ভব। এখন ইতোমধ্যে নয় মাস হয়ে গেছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে মানুষের আলোচনায় আসবে। আমরা যদি নাও করি মানুষ চুপ করে থাকবে না। আলোচনা হয়েছে কত দ্রুত এটা করা যায় এবং বিএনপি কখন এই নির্বাচনটি প্রত্যাশা করছে।’
নির্বাচনের ব্যাপারে বিএনপি’র স্পষ্ট বক্তব্য ইতোমধ্যে জানিয়ে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি’র এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমরা বলেছি, এই বছরের শেষ নাগাদ যদি নির্বাচন হয় তাহলে এটা জনগণের জন্য গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা বিশ্বাস করি অহেতুক যদি বিলম্ব হয় যে সমস্যাটি আপনারা দেখতে পারছেন আজকে বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিক যে পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলার যে পরিস্থিতি সেটা কিন্তু আজ থেকে ৯ মাস আগে ৫ আগস্টের যে পরিস্থিতি ছিলো তার থেকে ভালো নয়।’
তিনি আরো ‘কাজেই যদি দেশের স্থিতিশীলতা কোনো কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে কিন্তু এটা ১৮ কোটি মানুষের জন্য সুখকর হবে না। সেজন্য একটি কথা আমরা জোর দিয়ে বলেছি, জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি। সেই সত্যিকার প্রতিনিধি যেটা নির্ধারিত হতে পারে একমাত্র একটা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে সেই নির্বাচনটি যত শিগগিরই হয় তাহলে আমরা বিশ্বাস করি সেটা বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক হবে। সেই কথাটি আমরা তাদেরকে বলেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার ১৯৮২ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠনটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানবাধিকারকে এগিয়ে এবং মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কাজ করে।
প্রতিনিধি দলটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আগামী নির্বাচন নিয়ে মতবিনিময় করছে। তার অংশ হিসেবে বিএনপির সাথে এই বৈঠক হলো।