নড়াইল, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বাসস) : নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৫০তম শাহাদতবার্ষিকী আজ পালিত হয়েছে।
তাঁর জন্মস্থান নড়াইলের চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের নূর মোহাম্মদ নগরে এবং ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ মিলনায়তনে রোববার সকাল ১০টায় কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল- পবিত্র কোরআনখানি, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও গার্ড অব অনার প্রদান, র্যালি, দোয়া মাহফিল, বিশেষ মোনাজাত এবং প্রধানমন্ত্রীর উপহার সামগ্রী বিতরণ।
স্মৃতিসৌধে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ নূর মোহম্মদ শেখ ট্রাস্ট, জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, পুলিশ প্রশাসন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নাড়াইল জেলা শাখা,সদর উপজেলা প্রশাসন,মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বীরশ্রেষ্ঠ নূূর মোহাম্মদ মহাবিদ্যালয়, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ শেখের ৫০তম শাহাদতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক ও বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাস্টের সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ফকরুল হাসান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিলা সিদ্দিকা, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ট্রাষ্টের সদস্য সচিব ও চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: আজিজুর রহমান ভূঁইয়া, ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এসএ মতিন।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্সনায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চন্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে (বর্তমান নাম নূর মোহাম্মদ নগর) জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসে (ইপিআর) যোগদান করেন নূর মোহাম্মদ শেখ। দীর্ঘদিন দিনাজপুর সীমান্তে চাকরি করার পরে ১৯৭০ সালের ১০ জুলাই যশোর সেক্টরে বদলি হন। পরবর্তীতে ল্যান্স নায়েক পদোন্নতি পান তিনি । ১৯৭১ সালে যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুর এলাকায় পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে তিন সঙ্গীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনি নিজের জীবন উৎস্বর্গ করার অনন্য নজির স্থাপন করেন। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর বীরত্ব ও আতœত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ সরকার তাঁকে ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত করে। বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ’র জন্মস্থান মহিষখোলার নাম পরিবর্তন করে ২০০৮ সালের ১৮ মার্চ নূর মোহাম্মদ নগর করা হয়। তার স্মৃতিরক্ষার্থে নূর মোহাম্মদ নগরে নির্মাণ করা হয়েছে ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ এবং স্মৃতিসৌধ। প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মহাবিদ্যালয়।