শিরোনাম
ঢাকা, ৩০ মে, ২০২৩ (বাসস): রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূল করতে হলে তামাকের উৎপাদন ও ব্যবহার দুটোই কমিয়ে আনতে হবে।
একইসঙ্গে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়নসহ বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে সরকারের পাশপাশি নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে সমন্বিত প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি আগামীকাল ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস' উপলক্ষ্যে আজ দেয়া এক বাণীতে এ আহবান জানান। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, তামাক এক প্রকার বিষ যা মানুষকে ক্রমান্বয়ে মৃত্যুর দিকে ধাবিত করে। তামাক চাষ হতে শুরু করে প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং তামাকজাত পণ্য সেবন প্রতিটি পর্যায় জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর।
মোঃ সাহাবুদ্দিন বলেন, ধূমপান ও তামাক সেবন প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকসৃষ্ট রোগে পৃথিবীতে প্রতিবছর ৭০ লক্ষাধিক মানুষ অকালে মারা যায়। ধূমপানকে বলা হয় মাদক সেবনের প্রবেশ পথ। তামাক ও ধূমপান শুধু ধূমপায়ীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, পরোক্ষভাবে অধূমপায়ীকেও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়নসহ বিভিন্ন কারণে খাদ্য উৎপাদনযোগ্য কৃষি জমি কমে আসছে। অপরদিকে জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন সমস্যা খাদ্য উৎপাদনের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
এমতাবস্থায় খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সকল কৃষি জমিতে খাদ্যশস্য চাষ করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা আবশ্যক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেজন্য খাদ্য উৎপাদনযোগ্য কৃষি জমিতে ক্ষতিকর নেশাদ্রব্য তৈরির উপকরণ ও তামাক চাষের পরিবর্তে খাদ্যশস্য চাষ করা, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের বাজার নিশ্চিত করা এবং টেকসই ও পুষ্টিকর শস্য চাষ বৃদ্ধিতে সংশি¬ষ্ট কৃষকদের প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে উৎসাহিত করা জরুরি।’ এ প্রেক্ষিতে এবছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘তামাক নয়, খাদ্য ফলান’ অত্যন্ত যথার্থ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, তামাক চাষে অনেক বেশি সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়, যা ক্রমশ মাটির উর্বরতা হ্রাস করে। ফলে পরবর্তী সময়ে তামাক চাষের জমিতে খাদ্যশস্য উৎপাদন ভাল হয় না। এছাড়া কাঁচা তামাক পাতা চুল্লি¬তে আগুনের তাপে শুকানো ও বিড়ি-সিগারেট তৈরির জন্য বনজ সম্পদ ধ্বংস হয় এবং চুল্লি¬র আশপাশের বায়ু মারাত্মক দূষিত হয়। তামাক সেবন ও ধূমপানের ফলে হৃদরোগ, স্ট্রোক, ক্যান্সার, ডায়াবিটিস, হাঁপানিসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। তামাকের এই বহুমাত্রিক ক্ষতি বিবেচনায় নিয়ে তামাক চাষ কমাতে পারলে জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জনের পথ ত্বরান্বিত হবে। তিনি ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৩' উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন।