বাসস
  ২৯ মে ২০২৩, ১৯:১৬

লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ নেতা জসিম হত্যা মামলায় ৮ আসামির মৃত্যুদন্ড

লক্ষ্মীপুর, ২৯ মে, ২০২৩ (বাসস) :জেলা সদরে ছাত্রলীগ নেতা মেহেদী হাসান জসিমকে গুলি করে হত্যার দায়ে ৮ জনের মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আমিনা ফারহিন এ রায়  প্রদান করেন। রায় শুনে আসামি ও তাদের স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 
তিনি বলেন, এ মামলায় আদালতে ১২ আসামির বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে  । এরমধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। অন্য ৮ আসামিকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় ৭ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। দন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হিজবুর রহমান স্বপন পলাতক রয়েছে।
দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- আবুল হোসেন (৬৮), মোবারক উল্যা (৬১), কবির হোসেন রিপন (২৬), জাফর আহম্মদ (৬১), আলী হোসেন বাচ্চু (৪৩), মোস্তফা (৪৩), খোকন (৪৮), ও হিজবুর রহমান স্বপন (৪০)।
জসিম চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রলীগের সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার ছেলে। 
মামলার এজাহার সূত্রে জানাযায়, শ্রীরামপুর গ্রামের মফিজ উল্যার সঙ্গে একই বাড়ির মোবারক উল্যা ও আলী হোসেন বাচ্চুদের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে মোবারক ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি মফিজ ও তার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। এ ঘটনায় থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। এরপর থেকে মফিজের মামলাটি প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দেয়া হয়, প্রত্যাহার না করলে হত্যা করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। এজন্য মফিজ ও তার পরিবারের সদস্যরা  আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপনে থাকতেন। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষ মোবারকদের করা মামলাটি উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নুরনবী তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মফিজের ছেলে মেহেদী হাসান জসিমের নাম বাদ দেওয়ায় মোবারক চরম ক্ষিপ্ত হয়। এ কারণে জসিম ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের রাধাপুর গ্রামে আত্মীয় গোলাম মাওলার বাড়িতে আত্মগোপনে চলে যায়। জসিমের সঙ্গে তার বড় ভাই আবদুল হাই ও  গোলাম মাওলার ভাই মাসুদ একই কক্ষে ঘুমিয়ে ছিল। ওইদিন দিবাগত গভীর রাতে আসামীরা জানালার গ্রীল ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় তারা জসিমের বুকে গুলি করে। তাকে বাঁচানোর জন্য অন্যরা এগিয়ে এলে আসামিরা গুলি করার হুমকি দিয়ে তাদের পিটিয়ে আহত করে। পরে জসিমকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন মফিজ বাদী হয়ে সদর থানায় মোবারকসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত  আরো ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার নথি ঘেঁটে দেখা গেছে, সবশেষ ২০১৫ সালের ৮ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লক্ষ্মীপুর জেলা সিআইডির উপ-পরিদর্শক আফসার আহম্মেদ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এই রায় প্রদান করে।
মামলার বাদী মফিজ উল্যা বলেন, ‘ মামলার রায়ে আমি সন্তুষ্ট।’