বাসস
  ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৯:৫৮
আপডেট  : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২০:৪৩

চিরনিদ্রায় শায়িত সাংবাদিক আহসান উল্লাহ্

ঢাকা, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ (বাসস) : চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন দৈনিক জনতা সম্পাদক আহসান উল্লাহ্। এরআগে ফুলেল শ্রদ্ধায় তাকে শেষ বিদায় জানান সতীর্থরা। আজ সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নামাজে জানাজা শেষে বাদ জোহর রাজধানীর আজিমপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। 
আজ সকালে মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বেলতলা মসজিদে আহসান উল্লাহ্’র প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার কর্মস্থল ফকিরাপুলে দৈনিক জনতা কার্যালয়ের সামনে বেলা সাড়ে ১১টায় দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে দৈনিক জনতার প্রকাশক সৈয়দ মো. আতিকুল হাসান ও সাংবাদিক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আহসান উল্লাহ’র সাবেক সহকর্মী ও স্থানীয় গণ্যমান্য মানুষ অংশ নেন।
সর্বশেষ দুপুরা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে মরহুমের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নে সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূইয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংবাদিক এম আব্দুল্লাহ, মো. শহীদুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম। এছাড়া, সাংবাদিক ও সামাজিক সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।  
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল।
জানাজা শেষে মরহুম আহসান উল্লাহকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম, দৈনিক জনতা পরিবার ও খুলনা বিভাগ সাংবাদিক সমিতির নেতৃবৃন্দ। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বাদ জোহর আজিমপুর কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী সদস্য আহসান উল্লাহ্ মারা যান। ৮১ বছরের আহসান উল্লাহ ৬১ বছর ধরেই সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত ছিলেন।
দীর্ঘ সময় ধরে তিনি সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন দৈনিক জনতায়। বর্ষীয়ান সাংবাদিক আহসান উল্লাহ দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী ও বার্তা সম্পাদক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সিরাজুদ্দীন হোসেনের ভাগ্নে। ১৯৬২ সালে তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদাররা দৈনিক ইত্তেফাক অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার সময়, আহসান উল্লাহ দূর থেকে দাঁড়িয়ে সে দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছিলেন। 
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক বাংলার বাণীতে। এরপর ১৯৭৫ সালে ভারত বিচিত্রা পত্রিকার সম্পাদক হন। সম্পাদক থাকার সময়ই ১৯৭৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৮০-৮১ সালে তিনি ওই বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন।
এরপর ১৯৮৫ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লে. জেনারেল (অব.) হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ প্রতিষ্ঠিত দৈনিক জনতায় সিনিয়র সাব-এডিটর হিসেবে যোগ দেন। ১৯৯৬ সালে দৈনিক জনতা বন্ধ হয়ে গেলে, তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায়  (বাসস) কাজ শুরু করেন। 
এরপর ২০০৪ সালে আবার দৈনিক জনতায় ফিরে আসেন বার্তা সম্পাদক হিসেবে। কিছুদিন পর তিনি সম্পাদক হন। আহসান উল্লাহ দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার স্ত্রী বছর দুয়েক আগে মারা যান।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়