বাসস
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১০:২৫

গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের বন্দীরা পান করছেন সুপেয় পানি

॥ মনোজ কুমার সাহা ॥
টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ), ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২(বাসস) : গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের বন্দীরা পান করছেন নিরাপদ ও সুপেয় পানি। এ পানি পান করায় কারাবন্দীদের পানি বাহিত রোগ কমে গেছে। এখন তারা ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েডসহ পানি বাহিত রোগে তেমন আক্রান্ত হচ্ছেন না। কারাগারের নিরাপদ পানি বন্দীদের পাশাপাশি কারারক্ষী, কারাগারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পান করছেন।
জেলা কারাগার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, এ কারগারে প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৪৫০ জন কারাবন্দী অবস্থান করেন। এদের প্রতিদিন অন্তত ১ হাজার লিটার পানির চাহিদা রয়েছে। কারাগারের  রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট (আরও প্লান্ট) থেকে তাদের নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। 
গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার মোঃ মোশফিকুর রহমান বলেন, গোপালগঞ্জে জেলা কারাগারে নিরাপদ ও সুপেয় পানির বড় অভাব ছিল। গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জেলা কারাগারের পানির সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালে একটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে জেলা কারাগারে একটি রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট (আরও প্লান্ট) স্থাপন করে দিয়েছেন। এ পল্ট থেকেই কারাবন্দীসহ সবাই নিরাপদ ও সুপেয় পানি পান করছেন। এখন আর কারাগারে নিরাপদ পানির অভাব নেই।
গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ফয়েজ আহমেদ বলেন, পানির অপর নাম জীবন। অগভীর নলকূপে প্রচুর আইরন ও আর্সেনিক রয়েছে। এ পানি পানের অযোগ্য। তাই কারাগারে সুপেয় ও নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য আমরা ২ বছর আগে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট (আরও প্লান্ট) স্থাপন করে দিয়েছি। জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা কারাগারে নিরাপদ পানি সরবরহের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সোই উদ্যোগই আমরা আসের্নিক ঝঁকি নিরসন প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। এটি বাস্তবায়িত হওয়ায় কারগারের বন্দীসহ সবই নিরাপদ ও সুপেয় পানি পাচ্ছেন। এ পানি পান করে তারা পানি বাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে পারছেন। সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করছেন। 
কারাবন্দী জেলার কাশিয়ানী উপজেলার মনিরা বেগম (২৮) বলেন, এখানে আমরা নিরাপদ ও সুপেয় পানি পান করছি। বাড়িতে আমরা এত ভালো পানি পান করিনি । সুপেয় পানি আমাদের কারাগার জীবনকে নিরাপদ করে দিয়েছে। সুস্থ থাকতে সহায়তা করছে। এখানে এসে পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হইনি। কারা কর্তৃপক্ষ ও গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা আমাদের নিরাপদে রাখতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। 
কারা বন্দী ইমন (২৬) বলেন, কারগারের পানির মান ভালো। এ পানি আমি পান করি। আগে কারগারের পানি ভালো ছিল না। তাই যাদের সামর্থ ছিল তারা বোতলের পানি কিনে পান করতেন। সাধারণ বন্দীরা ভালো পানি পেত না। এখন ভালো পানি সরবরাহ করা হয়। তাই বোতলজাত পানি কিনে পান করতে হয় না। এখন এখানে পানীয় জলের কোন সমস্যা নেই। কারগারে সুপেয় ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা  করার জন্য আমি কর্তৃপক্ষকে অভিন্দন জানাই। 
গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার মোঃ ওবায়দুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা কারাগারের বন্দীদের দুঃখ,কষ্ট অনুধাবন করেন। তিনি নিয়মিত কারাগার পরিদর্শণ করেন। কারাবন্দীদের সুবিধার্থে তিনি সব সময় কল্যাণকর কাজ করে আসছেন। তার গতিশীল উদ্যোগে কারবন্দীরা এখানে ভালো থাকতে পারছেন। তিনি কারবন্দীদের কথা চিন্তা করে এখানে নিরাপদ পানি সরবাহের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর এখানে একটি ভালো মানের  রিভার্স অসমোসিস প্লান্ট করে দিয়েছে। এটি কারাগারের সবার খুব উপকারে এসেছে। 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার সবার রয়েছে। জেলা কারাগারে নিরাপদ ও সুপেয় পানির সু-ব্যবস্থা ছিল না। তাই আমরা নিরাপদ পানির  ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে কারাবন্দীরা নিরপদ পানি পান করে সুস্থ থাকতে পারছেন। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়