সুনামগঞ্জ, ৪ আগস্ট, ২০২১ (বাসস) : জেলার ৮৮ ইউনিয়ন এবং সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে আগামী ৭ জুলাই থেকে গণটিকা দেবার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এজন্য জেলাজুড়েই মাঠ পর্যায়ের স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের দুই দিনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৭ জুলাই শনিবার থেকে ১২ জুলাই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব কেন্দ্রে করোনার টিকা প্রদান করা হবে। এসময় ইপিআইয়ের টিকাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রমও চলমান থাকবে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দয়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, জেলার ৮৮ ইউনিয়নের মধ্যে দিরাই, ছাতক ও জগন্নাথপুর সদর ইউনিয়নকে একীভূত করে একটি টিকা দান কেন্দ্র হবে। প্রত্যেক টিকাদান কেন্দ্রে তিনটি টিকা প্রদান বুথ থাকবে। প্রতিটি বুথে একদিনে ২০০ টিকা দেওয়া হবে।
প্রত্যেক ইউনিয়নের সাবেক ১ নম্বর অর্থাৎ বর্তমানের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে টিকাদান কেন্দ্র করার প্রস্তুতি চলছে। জেলার চার পৌরসভার মধ্যে কেবল সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৯ ওয়ার্ডে টিকাদান কেন্দ্র করা হবে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন কমিটিকে আরও সক্রিয় করতে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে যুক্ত করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ শহরতলির কোরবাননগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বরকত জানান, কোরবাননগর ইউনিয়নের সাবেক ১ নম্বর অর্থাৎ বর্তমানের ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড হচ্ছে মাইজবাড়ি, বদিপুর ও কাইমতর এলাকা নিয়ে। ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় এ এলাকার কাছাকাছি এজন্য ওখানেই টিকাদান কেন্দ্র করা হবে। আজ বুধবার স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন এসে টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করবেন।
ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কর্মকর্তা ডা. রাজিব চক্রবর্তী বললেন, ছাতক সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় উপজেলা। ১৩ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এ উপজেলায়। আমরা ১৩ টি টিকাদান কেন্দ্র প্রস্তুত করা শুরু করেছি। মঙ্গলবার ও আজ বুধবার স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকদের এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এক কেন্দ্রে ২ জন টিকাদানকারী ও ৩ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবেন।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত বললেন, আমার পৌরসভায় নয় ওয়ার্ডে নয়টি টিকাদান কেন্দ্র করার নির্দেশ দেওয়া হলেও আমরা আরও বেশি টিকাদান কেন্দ্র করার উদ্যোগ নিয়েছি। যেখানে জনসংখ্যা বেশি, বড় ওয়ার্ড সেখানে বেশি টিকাদান কেন্দ্র করা হবে। যেমন ১ নম্বর ওয়ার্ডে ২ টি, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ২ টি, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২ টি, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২ টি, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ টি টিকাদান কেন্দ্র করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া টিকাদান শুরু’র পর অবস্থা বুঝে আরও টিকাদান কেন্দ্র বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে পারি আমরা।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বললেন, দলীয় নেতা কর্মী, ইমাম, পুরোহিতসহ সকলকে কাজে লাগিয়ে আমরা যত বেশি সংখ্যক মানুষ টিকা নিতে পারে, সেই চেষ্টা শুরু করেছি। স্বাস্থ্য কর্মীদের সহযোগিতা করার জন্য সকলেই প্রস্তুত রয়েছেন।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বললেন, করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা। স্বাস্থ্যকর্মীদের সহযোগিতা করাসহ সাধারন মানুষ টিকা দিতে যাতে আসে সেই উদ্যোগেও তারা সহযোগিতা করবেন। কোথাও পরিবহনের জন্য আর্থিক সহযোগিতার প্রয়োজন হলে, উপজেলা পরিষদ সেটি করবে।
সিভিল সার্জন ডা. শামস উদ্দিন বললেন, গর্ভবর্তী মায়েরা ব্যতিত ১৮ বছরের উর্ধ্বে বয়স যাদের তাদের সকলকেই করোনার টিকা প্রদান করা হবে। তবে প্রতিদিনই, প্রতিটি বুথে উপস্থিত হওয়া বয়স্ক ও নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে টিকা দেওয়া হবে। এরপর ১৮ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে। সাবেক ১ নম্বর ওয়ার্ডে ইউনিয়ন পরিষদ থাকলে ওখানে টিকাদান কেন্দ্র হবে। না থাকলে ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুবিধাজনক যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকাদান কেন্দ্র হবে। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত টিকা প্রদান করা হবে।