বাসস
  ১৪ আগস্ট ২০২২, ২২:০১

জাতির পিতার জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় শোকের আবহ

টুঙ্গিপাড়া, ১৪ আগস্ট, ২০২২ (বাসস) : জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো টুঙ্গিপাড়ায় বিরাজ করছে শোকের আবহ। বাঙ্গালী জাতির বেদনা মিশ্রিত শোকের দিন ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনে বাঙ্গালী জাতি হারিয়েছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী ও স্বাধীন বংলাদেশের স্থপতি ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। বাঙ্গালী জাতি এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
টুঙ্গিপাড়ায় থেকে বাসস সংবাদদাতা মনোজ কুমার সাহা জানান,  আগামীকাল সোমবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদৎ বার্ষিকী। জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে তাঁর জন্মভূমি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় শোকের আবহ সৃষ্টি  হয়েছে। শোকার্ত মানুষ বুঁকে শোকের চিহ্ন কালো ব্যাচ ধারণ করেছেন। টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ, সড়ক, অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি সর্বত্র উড়ছে কালো পতাকা। কালো কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়েছে তোরণ। এছাড়া ব্যানার ফেস্টুনে মাধ্যমে শোকের আবহ ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে। 
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা জানান, জাতীয় শোক দিবসের সকল কর্মসূচি সফল করতে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রশাসন, গণপূর্ত, এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সহ অন্যান্য দপ্তর প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। 
সোমবার সকালে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে আসবেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতীয় শোক দিবসের টুঙ্গিপাড়ার কর্মসূচীর সূচনা করবেন।
গত ১১ আগস্ট থেকে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে দর্শণার্থী প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছে। জাতীয় শোক দিবসের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিকে সমানে রেখে টুঙ্গিপাড়ার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। 
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়ির সহসভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ার সব মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে। মাদ্রাসা, এতিমখানায় খাবার বিতরণ করা হবে। এছাড়া, ১টি পৌরসভা ও ৫টি ইউনিয়নের ৫৪টি ওয়ার্ডে আলোচনা সভা, মিলাদ, দেয়া মাহফিল এবং দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান। মাতা শেখ সায়েরা খাতুন। পিতা মাতা তাকে আদর করে খোকা বলে ডাকতেন। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ ও  নেতৃত্বের গুনাবলী প্রকাশ পায়। দৃঢ়চেতা ও অসীম সহসী খোকা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন সবার প্রিয় মুজিব ভাই। ১৯৬৯ এর গণ আন্দোলণের চূড়ান্ত বিজয়ের পর ছাত্র জনতা তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করে। তিনি  দীর্ঘ লড়াই, সংগ্রাম  করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেন। হয়ে ওঠেন বাঙ্গালী জাতির পিতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে বিপথগামী সেনা সদস্যরা  বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ’৭৫ এর ১৬ আগস্ট মৃত্যুহীন নিথর দেহ নিয়ে  বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়ার প্রিয় মাটিতে ফিরে আসেন। পিতা-মাতার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। বঙ্গবন্ধুর কবরকে ঘিরে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে। বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ টুঙ্গিপাড়া গ্রামকে নবআলোকে উদ্ভাসিত করেছে। এটি এখন বাঙ্গালী জাতির তীর্থ ভূমিতে পরিণত হয়েছে। ছুটির দিনে এখানে  হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। এছাড়া, প্রতিদিনই শত শত মানুষ এখানে এসে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তার জন্য  চোখের জলে বুক ভাসায় ও আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করেন।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়