বাসস
  ০২ জুন ২০২২, ১৩:১৭

জয়পুরহাটে প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ

জয়পুরহাট, ২ জুন, ২০২২ (বাসস):  চলতি  ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে চাষ হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে প্রায় ৩৮ হাজার বেল পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করছে কৃষি বিভাগ।   
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসস’কে জানায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতা মূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাট কাটিকে ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া এসব কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে হাতে- কলমে চাষিদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা সহ অন্যান্য কার্যক্রম ।
কৃষি বিভাগ আরো জানায়, বিগত ১০ বছরে জেলায়  পাট চাষের হিসাবে দেখা যায় একই ধারায় চলছে পাট চাষ কার্যক্রম। এর মধ্যেও দিন-দিন পাট চাষে কিছুটা উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত দিনের পাট চাষের মধ্যে রয়েছে ২০১১-১২ মৌসুমে ৩ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৪ হাজার ২৯৪ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৩০৮ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ। ২০১২-১৩ মৌসুমে ৩ হাজার ২৪২ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৩ হাজার ৩৯৫ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ১১০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১২শ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা মণ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩ হাজার ৪১৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অর্জিত হয় ২ হাজার ৮০০ হেক্টর । এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২০ হাজার ৮০০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৪০০ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২০০ থেকে ১৮০০ পর্যন্ত। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ২ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯২৭ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ পর্যন্ত, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯১০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ২৯১ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত, ২০১৭-১৮ মৌসুমে ২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১২০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪২ হাজার ৪৩২ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ পর্যন্ত, ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩ হাজার ৯৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়। উৎপাদন হয়েছে  ৩৯ হাজার বেল পাট। এ বছর প্রতিমণ পাট বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০২০-২১ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ৩ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করা হলেও অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে উৎপাদন হয় ৩৭ হাজার বেল পাট। এ বছর পাটের দাম ছিল সর্বোচ্চ আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা মণ।  
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. শফিকুল ইসলাম বাসস’কে জানান, চলতি ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এতে প্রায় ৩৮ হাজার বেল পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়