বাসস
  ১৮ মে ২০২২, ১০:০৯

বোরো ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত জয়পুরহাটের কৃষাণীরাও  

জয়পুরহাট, ১৮ মে, ২০২২(বাসস) : বোরো ধান  ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকের পাশাপাশি সমান তালে ব্যস্ত সময় পার করছেন জয়পুরহাটের কৃষাণীরা। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বোরো ধান কাটা মাড়াই করতে অনেকটা হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে কৃষকদের। ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে।   
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র বাসসকে জানায়, জয়পুরহাটে চলতি  ২০২১-২০২২ নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির  আওতায় ৬৯ হাজার ৪ শ ২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৬৫ হাজার ২ শ ৭৫ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের রয়েছে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমি। এতে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৮ মেট্রিকটন। ঝড়ের কারণে বোরো ধানের গাছ গুলো মাটিতে হেলে পড়েছে তার মধ্যে  চলছে ভারি বৃষ্টিপাত। ফলে  পানিতে ডুবে থাকা ধান পচে যাওয়া বা ধান থেকে গাছ বের হওয়ার আশংকায় কৃষক-কৃষাণী মিলে  বোরো ধান কাটা মাড়াই ও শুকানো নিয়ে ফুসরত পাচ্ছেনা।  এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে টুকটাক ধান কাটা শুরু হলেও ঈদের পর থেকে পুরোদমে কাটা মাড়াই শুরু হয়েছে। শ্রমিকের চাহিদা মেটাতে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কর্মসূিচর আওতায় জেলায় এবার ২৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে  ধান কাটা মাড়াই করা হচ্ছে  এবং ইতোমধ্যে জেলায় ৫০ ভাগ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের  বিভিন্ন গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বোরো  ধান পেকে সোনালী বর্ণ ধারন করা  শীষ গুলো হেলে পড়েছে জমিতে। ভারি বৃষ্টির কারণে কিছু এলাকায় বোরো ধান পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে প্রায় ২১৩ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ । পাঁচবিবি উপজেলার বড়মানিক  এলাকার কৃষাণী  নুর জাহান , সেলিনা পারভিন  জানান, ভিজা ধান সিদ্ধ করে না শুকালে ঘরে রাখা যায় না।  সে করণে একটু রোদ উঠলেই ফাকা মাঠে ধান শুকানোর চেষ্টা করছেন।   একই এলাকার  কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, এবার ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে।  বৃষ্টিতে ধান ভিজে যাওয়ায় দামও কিছুটা কমেছে। প্রকার ভেদে  সাড়ে ৮শ থেকে সাড়ে ৯ শ টাকা মণ ধান বিক্রি হচ্ছে বর্তমান বাজারে। বৃষ্টির আগে বাজারে এক হাজার টাকা মণ  পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে বলেও জানান তিনি। জেলায় শ্রমিকের সংকট মোকাবেলায় ২৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে মাড়াই কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। ধান গাছ পড়ে যাওয়ায় কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে অধিকাংশ জমির ধান কাটতে সমস্যা হচ্ছে আবার  ধান কাটার জন্য  পাশবর্তী  জেলা  থেকে  শ্রমিকরা আসলেও  পানিতে ডুবে থাকা ধান দ্রুত মাড়াই কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে  না  বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  উপ পরিচালক কৃষিবিদ মো: শফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, আবহাওয়া কিছুটা বৈরি চলছে । ভিজা ধান ঘরে রাখাও সমস্যা। সিদ্ধ করা ধান শুকানোর পর ঘরে রাখা যাবে। সে কারণে কৃষকদের পাশাপাশি কৃষাণী রাও একটু সুযোগ পেলেই ফাকা স্থানে ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।  জয়পুরহাট জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টন ধান ও ২১ হাজার ১২৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জ্ঞান প্রিয় বিদুর্শী চাকমা ।  সরকারি ভাবে এবার ধান ২৭ টাকা কেজি ও চাল ৪০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।  

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়