বাসস
  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ২০:০১

পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর

ঢাকা, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ (বাসস) :  পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য তৈরি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের দিন শেষ, চলমান চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, বিগডেটা কিংবা ব্লকচেইন প্রযুক্তির সাথে মানবিক সমাজকে যুক্ত করে বিশ্ব এখন পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের পথে ধাবিত হচ্ছে। পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য নিজেদেরকে এখনই তৈরি করতে হবে। 
মন্ত্রী আজ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধুর অনুপ্রেরণা শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমরা রোবট কিংবা যন্ত্রের হাতে নিজেদের সপে দিব না। যন্ত্র মানুষের বিকল্প হবে না। আমরা যন্ত্র দিয়ে মানুষকে স্থলাভিষিক্ত করবোনা ঠিকই কিন্তু যন্ত্রকে আমাদের সহায়ক হিসেবে কাজে লাগাতেই হবে। এই লক্ষ্যে প্রচলিত শিক্ষার সাথে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এই জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। তবে ডিজিটাল যন্ত্র চালানোর নূন্যতম দক্ষতা প্রত্যেকেরই থাকতে হবে। এসব দক্ষতার কথা পাঠ্যবইতে না থাকলেও নিজের উদ্যোগেই এই দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’ তিনি এই লক্ষ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
 ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি কুদরত-ই খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, আইটিইউ ও ইউপিইউ’র সদস্য পদ অর্জন এবং বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। 
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে হত্যা করা হয়েছিলো। তিনি বলেন, ২০২২ সালে আজকের বাংলাদেশ যে জায়গায় উপনীত হয়েছে বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে আশির দশকের মধ্যেই তা সম্ভব হতো। তিনি বলেন, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং প্রযুক্তির সেরা কিংবদন্তী মানুষদের জীবনী অধ্যয়ন করেছি কিন্তু বঙ্গবন্ধুর মতো বহুমাত্রিক জীবন অতুলনীয়।
মন্ত্রী  কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘তুমি যে কাজ করছো তা মেধা সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় সচেনতা থাকতে হবে।’  ২০০৮ সালে ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ২০২১ সালে বাস্তবে পরিণত হওয়ার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, সবজী বিক্রেতা থেকে শুরু করে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে মানুষ এর সুফল পাচ্ছে। 
বিশ্বে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণাটি প্রকাশিত হওয়ার আট বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে পৃথিবীতে প্রথম  ডিজিটাল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ বছরে অতীতের শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে উন্নত বিশ্বের সমান্তরালে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে। 
‘কোভিড মহামারিতেও আমরা আমাদের জীবনধারা কেবল সচলই রাখিনি আমরা প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বে দৃষ্টান্ত হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের যে বীজটি বপন করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে তা চারা গাছে রূপান্তর করে গেছেন। এই সময়ে তার গৃহীত পদক্ষেপের ফলে কম্পিউটার - মোবাইল ফোন মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে যায়। দেশে কম্পিউটার প্রোগ্রামার তৈরির ক্ষেত্রে সুযোগ সৃষ্টির ফলে প্রযুক্তি শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়, ভি-স্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুর ফলে প্রযুক্তি বিকাশ ও ব্যবহারে দ্বার উন্মোচিত হয়। 
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসাইন এবং বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. মঞ্জুর আহমেদ বক্তৃতা করেন।