বাসস
  ২৬ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:৩৩

কলাবাগানে অধিগ্রহণকৃত প্রায় ১৬ একর জমি আগের মালিকরা ফিরে পাচ্ছেন

ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি, ২০২২ (বাসস) : রাজধানীর কলাবাগানে অধিগ্রহণকৃত বা নির্দেশিত এমন ১৬ একর জমি আগের মালিকরা ফিরে পেতে যাচ্ছেন। 
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এই এলাকায় ৭০ বছরের ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে এই নির্দেশনা দিয়েছেন।
আজ বুধবার ধানমন্ডি মৌজার অধিগ্রহণকৃত জমির জটিলতা নিরসনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় ভূমিমন্ত্রী এই নির্দেশ দেন। ভূমি সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী এ সময় কলাবাগান এলাকার ১৪ দশমিক  শূন্য শূন্য ৪৬ একর জমি অবমুক্ত করার নির্দেশ দেন। এছাড়া আরও ২ দশমিক ৮৬৫৪ একর জমির মধ্যে যেসব জমি বর্তমানে ব্যক্তির দখলে আছে সেসবও অবমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরুরও নির্দেশ দেন। 
তিনি বলেন, অধিগ্রহণকৃত বা অধিগ্রহণের জন্য নির্দেশিত কিন্তু ব্যক্তির নামে রেকর্ডকৃত কিংবা দখলে থাকা প্রায় ১৬ একর জমি পূর্বতন মালিকের অনুকূলে শিগগিরই অবমুক্ত করা হবে।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকার বা স্বার্থ সংরক্ষণ করা এই সরকারের অঙ্গীকার। জনস্বার্থ বিবেচনায় ইতোপূর্বে খাসমহাল সংক্রান্ত জটিলতা যা দীর্ঘদিন যাবত অনিষ্পন্ন ছিল তা আজ নিষ্পন্ন করা হয়েছে। তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, অবমুক্ত প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করা হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আইনি জটিলতা থাকায় এসব জমির মালিকরা কিংবা তাদের ওয়ারিশগণ ৭০ বছর যাবত জমির খাজনা খারিজ বা হস্তান্তর করতে পারছেন না। এই কারণে তারা তাদের ভূ-সম্পদের আনুষ্ঠানিক কিংবা অর্থনৈতিকভাবে ফলপ্রসু ব্যবহারও করতে পারছিলেন না। অবমুক্তের ফলে তাদের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে।   ভূমি মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ১৯৪৮-৪৯ সালে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসভবন নির্মাণকল্পে গণপূর্ত বিভাগের (তৎকালীন সিএন্ডবি) অনুকূলে রাজধানীর ধানমন্ডিসহ ৮টি মৌজায় মোট ৪৭২ দশমিক ৬৪ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে ৮ই জানুয়ারি, ১৯৫৩ সালে গেজেট প্রকাশনার মাধ্যমে অধিগ্রহণ চূড়ান্ত হয় এবং জমির দখল হস্তান্তরিত হয়।
কিন্তু প্রত্যাশী সংস্থা ধানমন্ডি মৌজার সিএস ৬৭ নম্বর দাগের অধিগ্রহণকৃত ১৬ দশমিক ৮৭ একর জমির মধ্যে ১৬ দশমিক শূন্য ৬ একর জমিতে কোনও সময়ে দখলে যায়নি। দীর্ঘদিন যাবত জমির আগের মালিকরা ওয়ারিশ বা অন্যান্যসূত্রে এই জমিতে বহুতল আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ভোগ দখলে আছেন। ১৯৬৮ সালে সরকার ভূমি মালিকদের উচ্ছেদ নোটিশ করলে ভূমি মালিকরা সরকারের উচ্ছেদ আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের রায় লাভ করেন।
জমির মালিকরা এই জমি সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনের জন্য ২০১৮ সালে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি মন্ত্রিপরিষদে উত্থাপিত হয়। এই বিষয়টির জটিলতা নিরসনে মন্ত্রিপরিষদ ভূমি মন্ত্রণালয়কে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহের সাথে আলোচনাক্রমে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করে।
আজ অনুষ্ঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় প্রতিবেদনসহ ঢাকা জেলা প্রশাসকের বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ ও অন্যান্য সংস্থার মতামত পর্যালোচনা করে ভূমিমন্ত্রী ব্যক্তির নামে রেকর্ডকৃত ও দখলে থাকা উপর্যুক্ত প্রায় ১৪ একর জমি পূর্বতন মালিকের অনুকূলে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত দেন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (অধিগ্রহণ) মুহাম্মদ সালেহউদ্দীন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক (ভূমি রেকর্ড) মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব শওকত হোসেন, ঢাকার জেলা প্রশাসক মোঃ শহীদুল ইসলাম সহ ভূমি মন্ত্রণালয় ও এবং গণপূর্ত বিভাগের আওতাভুক্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়