ঢাকা, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ (বাসস) : একটি ডেথ সার্টিফিকেটের জন্য বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় মৃত্যুবরনকারি আরাফিন আজাদ চৌধুরীর পরিবারকে। কিন্তু এতো হয়রানির পর ও মিলেনি ডেথ সার্টিফিকেট। অথচ ডিএনসিসি’র অঞ্চল-৪ এর অধীনেই মরহুম আরাফিন আজাদ চৌধুরীর বার্থ সার্টিফিকেট নিবন্ধন করা হয়েছিল। নিয়মানুযায়ী যেখান থেকে জন্ম নিবন্ধন হয়, সেখান থেকেই মৃত্যু সনদ দিতে হয়। মরহুম আজাদ চৌধুরীর ছোট ভাই বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার জ্যেষ্ট সাংবাদিক মো. আজম সারওয়ার চৌধুরী গত ১৮ জানুয়ারি ২০২২ ইং টেলিফোনে জোন ৪-এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ আলীর সাথে কথা বললে উনি বলেছেন, ‘কাউকে পাঠিয়ে দিন আমি করে দিব।’ আবেদ আলীর কথামতো গত ১৯ জানুয়ারি ২০২২ইং মরহুম আজাদ চৌধুরীর ছোট ছেলে শওকীন আজাদ চৌধুরী তার সাথে দেখা করে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিয়ে আসে। তখন নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক মজুমদারের কাছে পাঠিয়ে দেয়। স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শওকীন আজাদকে বলেন, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছ থেকে একটা সার্টিফিকেট এনে জমা দিতে বলে। সবকিছু দেয়ার পরও এখন আব্দুল খালেক বলেন এটা আমরা দিতে পারবো না, কারণ জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেটে ঠিকানা লেখা নেই। এর পর মরহুম আজাদ চৌধুরীর ছোট ভাই আজম সারওয়ার চৌধুরী নিজেকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেয়ার পরও আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেক মজুমদার বিভিন্ন অজুহাত দেখান। তখন সারওয়ার চৌধুরী স্যানিটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল খালেককে বলেন, ঠিকানা নেই তাহলে বার্থ সার্টিফিকেট দিলেন কীভাবে। এর পর খালেক মজুমদার বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখবো কীভাবে বর্তমান ঠিকানা ছাড়া বার্থ সার্টিফিকেট দেয়া হলো। অথচ স্থায়ী ঠিকানা ছিল, কিন্তু তারপরও ডেথ সার্টিফিকেট দিল না। রাজধানী শহরের যেকোন ধরণের চাকরিজীবীদের বর্তমান ঠিকানা কখনোই ঠিক থাকে না। যাদের নিজস্ব বাড়িঘর আছে তাদের ছাড়া অন্যদের আজ এখানে তো আগামীকাল আরেক জায়গায়। এটাই স্বাভাবিক। উল্লেখ্য, আরাফিন আজাদ চৌধুরী ২০২১ সালের ৯ এপ্রিল জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তখন তিনি অবসরোত্তর ছুটিতে ছিলেন। অথচ উনার চাকরির মেয়াদ ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছিল। জটিল ‘ক্রুজফিল্ড জ্যাকব ডিজিজ’ (সিজেডি) নামক রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। দেশি বিদেশি চিকিৎসকদের মতে প্রতি ১০ লাখে একজন লোকের এই রোগ হয়। কেন হয় তাও চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারেন না। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী থেকে মরহুম আজাদ চৌধুরীর পরিবারকে যাবতীয় পাওনার পরিশোধের জন্য ডেথ সার্টিফিকেট চেয়েছে। এমতাবস্থায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মরহুম আজাদ চৌধুরীর পরিবার পুলিশ প্রধান ড. বেনজির আহমেদ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের সুদৃষ্টি কামনা করছে।