শিরোনাম

নওগাঁ, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জেলায় পৌষের শুরু থেকেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা। দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। কুয়াশায় হাড় কাঁপানো শীত আর হিম বাতাসে জবুথুবু অবস্থা এ অঞ্চলের মানুষের। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে দিনমুজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। অনেক দিনমজুর শীত উপেক্ষা করে বেরিয়েও কাজ না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
আজ রোববার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। সেইসঙ্গে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে এ জনপদ। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাস থাকায় খুব একটা প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। গত কয়েকদিনে এই জেলায় ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রীর ঘরে তাপমাত্রা উঠানামা করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরে কাজের খোঁজে গ্রাম থেকে এসে মুক্তির মোড়, ব্রিজের মোড়, শিবপুর ব্রিজ (বাইপাস) এলাকায় জড়ো হয়েছেন কয়েকজন শ্রমিক। শ্রমের বিনিময়ে জীবিকা নির্বাহ করা এসব শ্রমজীবীরা পেটের তাগিদে কাজে আসে। বসে থাকা শ্রমিকদের প্রায় সবার সঙ্গেই রয়েছে মাটি কাটা ঝুঁড়ি আর কোদাল। তবে একদিকে শীতের কষ্ট অন্যদিকে অনেককেই কাজ না পাওয়ার বেদনা নিয়ে ফিরে যেতে হয় শূন্য হাতেই।
মুক্তির মোড়ে বসে থাকা সত্তর বছর বয়সী আবুল কাশেম বলেন, ‘মাঝে কিছুদিন শীত কম ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে প্রচুর শীত পড়ছে, সঙ্গে বাতাস বইছে। এই শীতে বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। তারপরও পেটের তাগিদে কাজে বের হতে গিয়ে সর্দি-কাশি লেগেই থাকছে। আমরা তো দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ। আয় কমে যাওয়ায় খুব সমস্যায় পড়েছি।’
তছলিম নামে আরেক শ্রমজীবী বলেন,‘ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীত। সাইকেল নিয়ে কাজে বের হলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়। গরিব মানুষ, কাজ না করলে আমাগে চলবো না। শীতে যত কষ্টই হোক কাজে আসতে হয়। গত দুই থেকে কোনো কাজ পাইনি। এসে এসে ঘুরে যাই।’
ব্রিজের মোড়ে কাজের সন্ধানে আসা ৬৫ বছর বয়সী হাজের আলী বলেন,‘রোদসহ নানা কিছুর ওপর নির্ভর করে আমাদের কাজ পাওয়া। শীত আসার পর থেকে কাজ নাই। পারিশ্রমিক কম দিলেও যা কাজ পাই তাই করি। কেউ কাজ পায় আবার কেউ পায় না। কাজ না পেলে বাড়ি ফিরে গিয়ে বসে থাকতে হয়।’