বাসস
  ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৮:১৭

সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তারেক রহমান

বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে মাতৃভূমিতে ফিরে সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি : বাসস

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫(বাসস) : দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে মাতৃভূমিতে ফিরে সকলকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা মঞ্চে যাওয়ার পথে আজ দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে এক ফেইসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’ ওই পোস্টের সঙ্গে তিনি চারটি ছবিও শেয়ার করেছেন। 

বিমানবন্দর থেকে শুরু করে তার গাড়িবহর ঘিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তাবেষ্টনী ও নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস দেখা যায় সেসব ছবিতে।

নির্বাসন ও সংগ্রামের দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে মায়ের কাছে ফিরলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-২০২ ফ্লাইটটি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে তারেক রহমানকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। পরে তারেক রহমান সেখানে উপস্থিত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে আলিঙ্গন ও কুশল বিনিময় করেন। 

এছাড়া বিমানবন্দরে ফুলের মালা দিয়ে তারেক রহমানকে বরণ করে নেন তার শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু।

বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জ থেকে বের হয়ে খালি জায়গায় খালি পায়ে মাটি স্পর্শ করে একমুটো মাটি হাতে নেন তারেক রহমান। এরপর বুলেট ফ্রুফ গাড়ি বাদ দিয়ে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ খচিত লাল সবুজের রং এর একটি বাসে চড়ে তার জন্য অপেক্ষমান সংবর্ধনা মঞ্চের দিকে রওনা হন। তার সাথে বাসে রয়েছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ববৃন্দ। পুরো রাস্তায় তিনি বাসটির সামনে থেকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান। নেতাকর্মীদের বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাসে ফেটে পড়ে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত করে রাখে।

এর আগে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় তিনি স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও কন্যা জাইমা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিয়মিত ফ্লাইটে বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে রওনা হন।

আজ সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে ফ্লাইটটি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সিলেটে প্রায় এক ঘণ্টার গ্রাউন্ড টার্নঅ্যারাউন্ডের পর তারেক রহমানকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বেলা ১১টা ১৩ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে এবং বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।

বিমানবন্দর থেকে লালসবুজ রঙে সাজানো বাসে করে রাজধানীর ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট) এলাকায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন তারেক রহমান।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারেক রহমানের প্রথম ও প্রধান অগ্রাধিকার হলো সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ মমতাময়ী মা, বাংলাদেশের অভিভাবক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়া। তবে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী, সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে, জনগণের প্রত্যাশার প্রতি সম্মান জানিয়ে, যাত্রাপথের মাঝামাঝি রাজধানীর ‘জুলাই ৩৬ এক্সপ্রেসওয়ে’ (৩০০ ফিট) এলাকায় দলের পক্ষ থেকে তৈরি করা গণঅভ্যর্থনা মঞ্চে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দোয়া কামনা, কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এরপর এভারকেয়ার হাসপাতালে মা বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে রওনা হন।

দীর্ঘ দেড় যুগ পর তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে দেশজুড়ে রাজনৈতিক অঙ্গন, নেতাকর্মী, সমর্থক এবং সর্বসাধারণের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ, কৌতূহল ও আবেগের সঞ্চার হয়েছে। এই প্রত্যাবর্তন শুধু একজন নেতার দেশে ফেরা নয়, বরং সর্বজনীন প্রত্যাশা ও আকাঙ্ক্ষার মেলবন্ধন, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান এবং বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ জনসমাগম।