শিরোনাম

চট্টগ্রাম, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : নগরের দীর্ঘদিনের যানজট নিরসনে মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ সহযোগিতা চান তিনি।
আজ বুধবার নগরীর টাইগারপাসস্থ চসিক কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সাথে সৌজন্যসাক্ষাৎ করেন মেয়র। এসময় গ্রেটার চিটাগাং ইকোনমিক ফোরামের প্রেসিডেন্ট আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, গত ২৪ জুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আরব কনস্ট্রাক্টর ও ওরাসকম পেনিনসুলা কনসোর্টিয়াম ও চট্টগ্রামে মনোরেল স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও বাস্তবায়ন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। পরদিন ২৫ জুন বিডা’র কাছে এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই ও বাস্তবায়নে সহযোগিতা চেয়ে পত্র পাঠানো হয়।
এর ধারাবাহিকতায় গত ১০ সেপ্টেম্বর বিডা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে পত্র দেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ২১ অক্টোবর চসিককে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়। সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর বিডা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে তাগাদা পত্র প্রদান করে।
সভায় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী। এখানকার যানজট নগরবাসীর জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। মনোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরীর গণপরিবহণ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী চট্টগ্রামের একজন কৃতি সন্তান। এজন্য চট্টগ্রামের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এ প্রকল্পটি যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত হয়, সেজন্য আপনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সরকারের নীতিনির্ধারকদের কার্যকর ভূমিকা ও সহযোগিতা কামনা করছি।
এসময় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী মনোরেল প্রকল্পে আন্তর্জাতিক মানের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, দেশের অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ধারণাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ যুক্ত হলে প্রকল্পটি দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। নগরীর জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী খোঁজ নেন এবং পরামর্শ দেন।
জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগে চলতি বছরে নগরীর জলাবদ্ধতা প্রায় ৬০ শতাংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য নগরীর ২১টি খাল খনন ও সংস্কারের জন্য একটি ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদিত হলে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। প্রকল্পটির পাশে আপনার সহযোগিতা কামনা করছি।
এ ছাড়া নগরীর ডোর-টু-ডোর বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রমের অগ্রগতির কথাও তুলে ধরে মেয়র জানান, ৪১টি ওয়ার্ডে প্রতিনিধি নিয়োগের ফলে প্রতিদিন অতিরিক্ত প্রায় ৫০০ টন বর্জ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ সেবাটি বিনামূল্যে করার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন, প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির চৌধুরী এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সাদাত মো. তৈয়ব।