শিরোনাম

সাতক্ষীরা, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): নানা আয়োজনে ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়েছে গৌরবোজ্জ্বল সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে (৭ ডিসেম্বর) হানাদার মুক্ত হয় সাতক্ষীরা জেলা।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, শহীদদের রুহের শান্তি কামনায় নিরবতা পালন, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাতক্ষীরা জেলা ইউনিটের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে এসব কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করেন জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের স্বজনরা।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুজ্জামান খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী রিয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মোস্তফা নুরুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর করিম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুল ইসলাম মইন, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ কুমার দাস প্রমুখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিক আহমেদ মোল্লা।
বক্তারা এসময় বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চায়। সরকারি হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসাসেবা ও চিকিৎসার অর্থ নিশ্চিত করার দাবি জানান সরকারের প্রতি।
বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে আগামী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে উঠতে হবে। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলার শিকারে ক্ষোভ ব্যক্ত করেন বক্তারা।
মুকিাযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম এসময় সাতক্ষীরার মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনার স্মৃতি তুলে ধরে জানান, ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে গুলিতে আবদুর রাজ্জাক নিহত হওয়ার পর জেলায় আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের খরচ জোগাতে মুক্তিযোদ্ধারা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র এবং ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে টাকা ও অলংকার সংগ্রহ করেন।
২৭ মে ভোমরা সীমান্তের সম্মুখ যুদ্ধে পাকিস্তানি দুই শতাধিক সেনা সদস্য নিহত এবং তিনজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরবর্তী গেরিলা অভিযানে শহীদ হন আরও ৩৩ জন। ৩০ নভেম্বর রাতের টাইম বোমা বিস্ফোরণে সাতক্ষীরার পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিলে পাকিস্তানি বাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়ে এবং ৬ ডিসেম্বর রাতে তারা বিভিন্ন সেতু উড়িয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও সাতক্ষীরার অনেক বধ্যভূমি ও গণকবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি