বাসস
  ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১০:২৯

বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত 

ছবি: বাংলাফ্যাক্ট

ঢাকা, ২০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম। ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চল বিবেচনা করে সূচকটি তৈরি হলেও, বেশ কিছু গণমাধ্যমে ১০৬টি দেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকা মিসফ্রেমিং করে খবর প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক সংস্থা ‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’-এর প্রকাশিত সর্বশেষ বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক (অক্টোবর ২০২৫) নিয়ে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও নেতিবাচক ফ্রেমিং লক্ষ্য করা গেছে। অক্টোবরে প্রকাশিত সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১০০তম।

দেশের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি বিষয়ে বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, ‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’ বিশ্বের ১৯৯টি দেশ ও অঞ্চলকে বিবেচনায় নিয়ে বৈশ্বিক পাসপোর্ট সূচক তৈরি করে। তবে র‌্যাঙ্কিংয়ে কিছু দেশ যৌথভাবে একই স্থান পাওয়ায় মোট ক্রমসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৬টি। 

কিন্তু কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, যুগান্তর, বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর, যায়যায়দিন, শেয়ার বিজ, আমাদের সময়, ঢাকা পোস্ট ও নিউ এইজ-এর মত কয়েকটি সংবাদমাধ্যম তাদের প্রতিবেদনে ‘১০৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০০তম’ বলে উল্লেখ করেছে।

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের ১০০তম অবস্থান নিয়ে কালের কণ্ঠ ও বাংলাদেশ প্রতিদিন একই শিরোনাম ‘গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে বাংলাদেশি পাসপোর্ট’ ব্যবহার করেছে। যদিও প্রতিবেদনের শুরুতেই পত্রিকা দুটি ‘গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেছে। 

শিরোনাম ও সংবাদের মধ্যে পাসপোর্ট সূচকে সাম্প্রতিক চূড়ান্ত অবনতির ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেওয়া হয়েছে। অথচ গত এক দশকে পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান সাধারণত ৯৫ থেকে ১০০-এর মধ্যে ওঠানামা করেছে। ২০২৩, ২০২২ ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল যথাক্রমে ১০১, ১০৩ ও ১০৮।

‘হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স’-এর পাসপোর্ট র‌্যাঙ্কিং নিয়ে সংবাদ পরিবেশনায় বিভ্রান্তি নতুন নয়। ২০২২ সালেও বিভিন্ন গণমাধ্যম সূচকে বিবেচিত দেশের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করেছিল। ফ্যাক্টচেক প্রতিষ্ঠান ফ্যাক্টওয়াচ সে সময় বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

‘বাংলাফ্যাক্ট’ প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্টচেক, মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস টিম, যারা নিয়মিতভাবে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করে সত্য তুলে ধরে এবং গণমাধ্যম ও সংবাদ বিষয়ক গবেষণা পরিচালনা করে।

গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম ও ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাশাপাশি দেশের কিছু ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেও বাংলাদেশকে জড়িয়ে, অন্তর্বর্তী সরকার ও ২০২৪ সালের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনের বিরুদ্ধে গুজব ও ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বেড়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো।

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া শত শত ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান ‘বাংলাফ্যাক্ট’। দেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছে প্রতিষ্ঠানটি।