শিরোনাম
ঢাকা, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : জামায়াতে ইসলামী মায়ের জাতিকে মায়ের মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করে পুরুষের পাশিপাশি নারীদেরকে জাতীয় ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার সুযোগ করে দিয়ে অনন্য মর্যাদায় অভিষিক্ত করতে চায় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
তিনি আজ বৃহস্পতিবার মিরপুরের পুলিশ কনভেনশন হলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর-কাফরুল অঞ্চলের উদ্যোগে (ঢাকা-১৫ আসন) আয়োজিত এক মহিলা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-১৫ আসনের সচিব শাহ আলম তুহিনের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীরে আব্দুর রহমান মুসা ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহম্মদ তসলিম।
এতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো.শহিদুল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার কাজী আবিদ হাসান, মহিলা দায়িত্বশীলা ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আল্লাহ আমাদেরকে মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের দায়িত্ব হলো জীবনের সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর হুকুম ও রাসূল (সা.)-এর আদর্শ যথাযথভাবে অনুসরণ করা। মূলত, আল্লাহর হুকুম পালনের মাধ্যমে মানুষ সম্মানিত হয়। আর অমান্যকারীদের জন্য রয়েছে অপমান ও লাঞ্ছনা। বস্তুত, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর চরিত্র মাধূর্য ও জীবনাদর্শ সর্বশ্রেষ্ঠ। তাই আমাদের সকলকে রাসূল (সা.)-এর আদর্শে জীবন গড়তে হবে।
তিনি জামায়াতের কর্মপন্থার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের লড়াই আল্লাহর পথে আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য। যারা আল্লাহর পথে লড়াই করে, তারা আল্লাহর সৈনিক।
এ লড়াই কোন সশস্ত্র সংগ্রামের নাম নয় বরং শয়তানের ওয়াসওয়াসার বিপরীতে নিজের নফসের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপকারীরাই প্রকৃত সংগ্রামী ও যোদ্ধা। মূলত, আমরা এমন এক সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছি, যার মাধ্যমে সমাজে ন্যায়-ইনসাফ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হবে। কোন ক্ষেত্রে জুলুম, নির্যাতন, অন্যায়, অনাচার ও অপরাধ প্রবণতা থাকবে না। আমরা এমন এক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যে সমাজে কোন হানাহানী ও বৈষম্য থাকবে না। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলেই সমান আইনের আশ্রয় গ্রহণের সুযোগ লাভ করবেন। দেশ অপশাসন- দুঃশাসন মুক্ত হবে।
শান্তির সেই সমাজ বিনির্মাণে একদফায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, ইসলাম প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শুধু পুরুষ নয় বরং নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশ গ্রহণ রয়েছে। এক্ষেত্রে হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রা.) সকলের চেয়ে অগ্রগামী ছিলেন।
রাসূল (সা.)-এর কাছে প্রথম ওহী আসার পর কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। উম্মুল মোমেনীন তাকে কম্বলাবৃত করে ‘আপনি পরোপকারী এবং কারো কোন ক্ষতি করেন নি’ বলে আশস্ত করে তাকে তার চাচাতো ভাইয়ে কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। পাদ্রী ওয়ারাকা বিন নওফেল তাকে দেখেই শেষ নবী হিসাবে চিনতে পারেন। ওয়াকারার কথা শোনামাত্রই উম্মুল মোমেনীন হযরত খাদিজা (রা.) আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.)-এর ওপর ঈমানের ঘোষণা দেন এবং তিনিই ছিলেন গর্বিত প্রথম মুসলিম।
তিনি ইসলামের প্রথম শহীদ হযরত সুমাইয়া (রা.)’র কথা উল্লেখ করে বলেন, ইসলামের প্রাথমিক সময়ে ৫শ’ জন ইসলাম গ্রহণকারীর মধ্যে একজন ছিলেন ইসলামের প্রথম শহীদ হযরত সুমাইয়া (রা.)। ওহুদের যুদ্ধে রাসূল (সা.)কে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য মানবঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন হযরত সুবাইতা (রা.)। তিনি রাসূল (সা.)-এর দিকে নিক্ষেপ করা সকল আঘাত সমস্ত শরীর পেতে দিয়ে ধারণ করেছিলেন। রাসূল (সা.)-এর শশ্রুষায় তিনি দ্রুত আরোগ্যও লাভ করেছিলেন। মূলত, ইসলামে নারী জাতিকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
তিনি আল্লাহর জমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় অতীতের মত নারী সমাজকে ময়দানে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনে আহবান জানান।