শিরোনাম
রেদওয়ান আহমদ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে টানা ১৮ দিনের সরব ও জমজমাট প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, সোমবার রাত ১১টার পর থেকে কোনো প্রার্থী বা প্যানেল আর প্রচারণা চালাতে পারবে না। আগামীকাল বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ।
এ বিষয়ে চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, সোমবার রাত ১১টা থেকে আর প্রচারণার সুযোগ পাবে না প্রার্থীরা। নয়তো আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে অভিযুক্ত হবে।
১৮ দিনের প্রচারণায় জমজমাট ক্যাম্পাস : গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) থেকে শুরু হওয়া প্রচারণায় পুরো ক্যাম্পাসে বইয়ে গেছে নির্বাচনী হাওয়া। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে। পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে দেয়াল, মিছিলে মুখরিত হয়েছে ক্যাম্পাস। পথসভা, পরিচিতি সভা, লিফলেট বিতরণ, সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীরা ফিরে পেয়েছে নির্বাচনী উৎসবের রঙ।
ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মো. সাফায়াত হোসেন বলেন, আমরা অফলাইনে যেমন প্রচার-প্রচারণা করছি, পাশাপাশি অনলাইনেও প্রচার-প্রচারণা চালানোর চেষ্টা করছি। আমাদের সামর্থ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আগামীকাল একটি সুষ্ঠু, সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষা করছি।
ডিজিটাল মাঠেও সমান লড়াই : প্রচারণা শুধু মাঠে সীমাবদ্ধ থাকেনি। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও জমে ওঠে প্রতিযোগিতা। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, এমনকি টেলিগ্রামেও ছড়িয়ে পড়ে নির্বাচনী বার্তা। অনেক প্রার্থী ও প্যানেল আলাদা পেজ খুলে গ্রাফিক ডিজাইন করা ব্যানার, অনলাইন পোস্টার, ফটোকার্ড, ম্যানিফেস্টো ও প্রমোশনাল ভিডিও প্রকাশ করেন। অনলাইনভিত্তিক এই প্রচারণা বাস্তব প্রচারের সমান্তরালে আরেকটি ‘ডিজিটাল ময়দান’ তৈরি করেছে।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মীলন প্যানেলের সহ-সভাপতি পদপ্রার্থী মাহফুজুর রহমান বলেন, অফলাইনে সাড়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের কাছে আলাদা আলাদা করে পৌঁছানো সম্ভব না। তাই, আমরা অনলাইনেও আমাদের প্রচারণা করেছি। ভোটারদের কাছে আমাদের ইশতেহার, অঙ্গিকার পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি।
তফসিল থেকে চূড়ান্ত তালিকা: ২৮ আগস্ট নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। এরপর ১ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা ও ১১ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশিত হয়। ১৪ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ চলে, ১৮ সেপ্টেম্বর থাকে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। যাচাই-বাছাই শেষে ২১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় থাকে ২৩ সেপ্টেম্বর। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করা হয় চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা। এরপর থেকে শুরু প্রচার-প্রচারণা।
২৬টি কেন্দ্রীয় পদে ভোট, প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০৮ জন : এবারের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি, হল সংসদের ১৪টি এবং হোস্টেল সংসদের ১০টি পদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, মোট চাকসু, হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনে ৯০৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৪১৫ জন এবং হল ও হোস্টেল সংসদে ৪৯৩ জন প্রার্থী রয়েছেন। আর মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।