শিরোনাম
রংপুর, ১০ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, “বিএনপি কোনো অবস্থাতেই পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতির নির্বাচনে বিশ্বাসী নয়।”
তিনি বলেন, “দলীয় স্বার্থ হাসিলের জন্য কোনো পদ্ধতি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না।”
আজ শুক্রবার রংপুর শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে রংপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু-র স্মরণসভায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদ হোসেন বলেন, “যারা নতুন নতুন কথা বলে নির্বাচন ও গণতন্ত্রকে প্রলম্বিত করার বাহানা খুঁজছেন, তারা খুঁজতেই পারেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ বিগত ৫৪ বছর ধরে সরাসরি ভোট দিতে অভ্যস্ত। সংবিধান অনুযায়ী সরাসরি ভোটের মাধ্যমেই প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়, এবং জনগণ সেটিতেই বিশ্বাস করে।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব দল পিআর পদ্ধতির কথা বলছেন, তারা চাইলে তা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। জনগণ যদি তাদেরকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, তখন তারা তা বাস্তবায়ন করতে পারেন। কিন্তু বিগত ৬০ বছরের ইতিহাসে তাদের কতজন সংসদে প্রতিনিধিত্ব করেছেন, আদৌ কি জনগণ তাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছে? বিএনপি অতীতে দেশ পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে মনে করে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রচলিত পদ্ধতিতেই নির্বাচন হওয়া উচিত।”
৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। জনগণের আস্থাভাজন হাজার হাজার প্রার্থী রয়েছে আমাদের। দলের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পার্লামেন্টারি বোর্ড যথাসময়ে দলীয় মনোনয়ন দেবে। নির্বাচন কমিশন যখন সময়সূচি ঘোষণা করবে, তার আগে অথবা পরে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল প্রার্থী ঘোষণা করবে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মধ্য ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে- প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন এবং পরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে রোডম্যাপ দিয়েছেন, আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিশ্বাস করি, সেই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
এনসিপির প্রতীক নিয়ে আপত্তির বিষয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল বলেন, “তারা তাদের প্রতীকের জন্য দাবি জানাতেই পারেন। তবে যে প্রতীক যুগ যুগ ধরে দেশে ব্যবহৃত হয়েছে, যে প্রতীকে পূর্বে নির্বাচন হয়েছে এবং জনগণ ভোট দিয়েছে, সে প্রতীক নিয়ে আপত্তি জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না।”
রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “একটি আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতা রাখে এমন ১০-১২ জন প্রার্থী রয়েছেন। দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।”
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, “আনিছুর রহমান লাকু ছিলেন রংপুর বিএনপির বলিষ্ঠ নেতা। তাঁর অমায়িক ব্যবহার নেতাকর্মীদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিল। তাঁর মৃত্যুতে রংপুরে কিছু সময়ের জন্য হলেও বিএনপি নেতৃত্ব শুন্যতায় ভুগবে।”
রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামছুজ্জামান সামু, এবং জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।