শিরোনাম
বগুড়া, ২৬ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): বগুড়ার লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের পণ্য বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে জেলার উদ্যোক্তারা তৈরি করেছেন অনলাইন প্লাটফর্ম । আরও আছে ই-ডিরেক্টরি, যাতে অন্তত ৩০০ জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। এর মাধ্যমে জেলার লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য শুধু দেশ নয়, বিদেশের বাজারেও ব্যাপকহারে ছড়িয়েছে। এই খাতে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এসব কথা জানা যায় বগুড়ার লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্যোক্তাদের কাছে থেকে। সোমবার শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে ‘স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাতের সম্ভাবনায় বগুড়া পৌরসভার ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব আলোচনা হয়।
সুইজারল্যান্ড ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত ‘প্রবৃদ্ধি’ প্রকল্প এবং বগুড়া পৌরসভার সহায়তায় বগুড়া লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং খাত থেকে অর্থনৈতিক সম্ভাবনা নিয়ে উদ্যোক্তারা আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শাজাহান আলম প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি জানান, ২০২২ সালের এপ্রিলে পৌরসভার সঙ্গে ‘প্রবৃদ্ধি’ প্রকল্পের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে একটি ই-মার্কেটপ্লেস তৈরি এবং ২৫০টি কারখানার ই-মার্কেটিং দক্ষতা বৃদ্ধি। ২০২৫ সালের মার্চে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ই-ডিরেক্টরি তৈরি। ২০২৫ সালের জুলাইয়ে পৌরসভায় ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু। এছাড়া কালিতলা বাজারে শেড তৈরি করা হয়।
আলোচনা সভায় উদ্যোক্তারা জানান, বগুড়ার ৮শ এর বেশি ছোট বড় কারখানা রয়েছে। এই কারখানাগুলোতে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। সরকার যদি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পকে সহায়তা করতে উদ্যোক্তাদের জমি বরাদ্দ দেয় তবে আরও শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে।
বক্তারা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন বাড়াতে হবে। যাতে আমদানি ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনা যায়। চায়নার পণ্য আমদানি না করে চায়নার মত কারিগরি সহায়তা নিয়ে দেশের কম দামে পণ্য উৎপাদনের দিকে ঝুঁকতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, বগুড়া পৌরসভায় আগে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করতো ৭ হাজারের মত ব্যক্তি এখন এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজারের মত। এ থেকে পৌরসভার আয় ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। পৌর সভার হোল্ডিং ট্যাক্স পুনর্বিবেচনা করার কারণে আয় বেড়ে গেছে।
সেমিনারে বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল মেশিনারি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বামমা) সাধারণ সম্পাদক রাজেদুর রহমান রাজু বগুড়ার লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বাজার বৃদ্ধির জন্য অনলাইন প্লাটফর্ম করেছি আমরা। এছাড়া ই ডিরেক্টরি করা হয়েছে। এতে অন্তত ৩০০ জন উদ্যোক্তা রয়েছেন। এর ফলে ভারত, নেপালে আমাদের পণ্য বিক্রি বেড়েছে, যার মধ্যে সেন্ট্রিফিউগাল পাম্প বেশি।
লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আমাদের সম্ভাবনা অনেক বেশি। কিন্তু আমাদের জায়গা সংকট আছে। আমাদের বিসিকে জায়গা পাওয়া খুব কষ্টকর। এসবে নজর দিতে হবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায় বলেন, বাজারে প্রতিযোগিতা চলছে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে ভালো পণ্য মার্কেটিং করতে হবে। চায়নার জনগন চাকরি খোঁজেন না তারা উদ্যোক্তা হয়। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে টিকে থাকতে হলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। সুইস কন্ট্যাক্টের মাধ্যমে অনেক কাজ হয়েছে পৌরসভায় তা জনগনের জীবন মান উন্নয়নে কাজে লাগবে।
বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. মাসুম আলী বেগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের মহা পরিচালক জীবন কৃষ্ণ সাহা রায়, বগুড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, বিসিক বগুড়ার ডিজিএম মো.মাহফুজুর রহমান, সুইসকন্ট্যাক্টের সিনিয়র এ্যাডভাইজার (প্রবৃদ্ধি) রোকন উদ্দিন আহমেদ, উদ্যোক্তা তহমিনা পারভিন শ্যামলী প্রমুখ।