বাসস
  ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৪:৩৭

রংপুরে বিক্রির হাত থেকে রক্ষা পেল শামুকখোল ও নিশি বক

রংপুরে বিক্রির হাত থেকে রক্ষা পেল শামুকখোল ও নিশি বক। ছবি : বাসস

রংপুর, ২৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : বিক্রির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে দুটি শামুকখোল ও একটি নিশি বকের বাচ্চা। নগরীর সুপার মার্কেটের সামনে পাখিগুলো বিক্রি করতে দেখেন সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুজন)-এর মহানগর সভাপতি ফখরুল আনাম বেঞ্জু। তিনি কৌশলে পাখি বিক্রেতাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন।

পুলিশ আসতে দেরি করায় পাখি বিক্রেতা পাখি ফেলে পালিয়ে যান। পরে বন বিভাগে খবর দেয়া হলে তারা পাখি তিনটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সেবা শুশ্রুষার পরে প্রায় এক মাস বয়সী পাখির বাচ্চাগুলো এখন ভাল আছে। বন বিভাগ বলছে, পাখিগুলো সুস্থ হলে তাদের মুক্ত করে দেয়া হবে।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এলাকাভেদে এই পাখিগুলো ‘শামুকখোল’, ‘শামুকভাঙা’ বা ‘শামুক ঠোকরা’ নামে পরিচিত। অদ্ভুত ঠোঁটের জন্য খুব সহজে অন্যান্য পাখি থেকে এদের আলাদা করা যায়। ঠোঁটের নিচের অংশের সাথে উপরের অংশের বেশ বড় ফাঁক থাকে। কয়েক দশক ধরে এই পাখির সংখ্যা ক্রমেই কমছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এই প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। খাবার ও বাসস্থানের অভাবে পাখিটি এক সময় দুর্লভ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

নিশি বক এক ধরনের নিশাচর পাখি। সন্ধ্যাবেলা শব্দ করে বাতাসে উড়াল দিয়ে বিচরণ শুরু করে। নিশি বক সুলভ প্রজাতির বক হলেও বিগত কয়েক দশক ধরে এদের সংখ্যা কমছে। স্ত্রী ও পুরুষ বক উভয়েই দেখতে একই রকম। তবে পুরুষ বক আকারে তুলনামূলকভাবে একটু বড় হয়ে থাকে। যুবারা বাদামি, যার উপর অনেক স্পষ্ট সাদা দাগ এবং রেখা থাকে। কারো কারো মাথার উপর কালো অংশ দেখা যেতে পারে। এদের চোখ এসময়ে কমলা রঙের হয়। পুকুর, দিঘী, ছোট নদী, খাল, বিল, হ্রদ, জলাভূমি, ম্যানগ্রোভ, কৃষিভূমি, বিশেষত ধানক্ষেত নিশি বকের প্রধান বিচরণস্থল।  

ফখরুল আনাম বেঞ্জু বাসসকে বলেন, সুপার মার্কেটে গিয়েছিলাম একটি কাজে। ব্যাগ হাতে হঠাৎ একজন এসে বলেন, স্যার পাখি কিনবেন। পাখি তিনটি দেখে তাকে কৌশলে একটি দোকানে নিয়ে গেলাম। সাথে সাথে পুলিশকে খবর দিলাম।  নবাবগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ সময় মতো আসতে না পারায় পাখি বিক্রেতা কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পাখিগুলোকে বন বিভাগে হস্তান্তর করি।  

ফখরুল আনাম বেঞ্জু এবং বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেনের তড়িৎ পদক্ষেপের কারণে ভোজন বিলাসীদের রসনা তৃপ্তির হাত থেকে এ যাত্রা পাখি তিনটি রক্ষা পায়।  

রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, পাখি তিনটি বন বিভাগের পরিচর্যায় রয়েছে। এখন অনেকটা সুস্থ। ভালোমতো উড়তে শিখলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে।