বাসস
  ২৪ জুলাই ২০২৫, ২০:৩১
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ২০:৫৪

আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে : নাহিদ ইসলাম

ছবি : বাসস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করা হবে। 

তিনি আজ দুপুরে জেলা শহরে আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে জুলাই পদযাত্রা শেষে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সব সময় ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই জেলার সাহসী সন্তানেরা বারবার রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব আন্দোলনেই তারা সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছে। 

তিনি বলেন, উন্নয়ন শুধু ঢাকায় নয়, বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জেলায় সুষম বণ্টন করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার গ্যাসের মাধ্যমে ঢাকাসহ সারাদেশে বিভিন্ন জেলার গ্যাসের চাহিদা পূরণ হলেও এখানকার মানুষ গ্যাস থেকে বঞ্চিত রয়েছে। আমরা এমন রাষ্ট্র চাই না যেখানে উন্নয়ন হলেও নিজের এলাকার মানুষ বঞ্চিত হয়।

এনসিপি সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, জীবন ও রক্তের বিনিময়ে যে পরিবর্তনের আশা করা হয়েছিল সেই পরিবর্তনকে থামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে আবারো সবাইকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথে জীবন দিয়ে বাংলাদেশকে নতুন ভাবে সাজানো হবে। 

তিনি বলেন,সংস্কারের মাধ্যমে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। কারণ গত অর্ধশতকে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হয়েছে। 

এনসিপির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা ভেবেছিলাম ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি, মাইলস্টোনের ঘটনাকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ আবার পুনর্গঠিত হচ্ছে। আমি দেশের সব রাজনৈতিক দলকে বাংলাদেশের স্বার্থে ফ্যাসিবাদ বিরোধী অবস্থানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের মোকাবিলা করতে আহ্বান জানাই। 

সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য আমরা যে সংস্কার প্রস্তাবগুলো দিয়েছি, এই সংস্কার প্রস্তাবের বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। 

দলটির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা কথা দিচ্ছি, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে আমরা ইতিহাস গড়ব। 

প্রতিটি উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে এনসিপির কমিটিকে সুসংগঠিত করার আহ্বান জানিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য একটা রাজনৈতিক দল, আরেকটা রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতা করব। কিন্তু পরশ্রীকাতরতা ও হিংসার রাজনীতি বাংলাদেশে পুনর্বাসন হবে না। আমরা একসঙ্গে বাংলাদেশ গড়ব।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ উদ্দিন মাহ্দী বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেবল জুলাই গণঅভ্যুত্থানই নয়, ২০২১ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধী দিল্লির আধিপত্যের বিরুদ্ধেও এই জেলার মানুষ নিজের রক্ত ও জীবন দিয়েছে। 

পথসভায় আরও বক্তব্য দেন, দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আতাউল্লাহ, সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জিহান, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা প্রধান সমন্বয়কারী আজিজুর রহমান লিটন প্রমুখ।

এর আগে সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ এবং ২০২১ সালের ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে হওয়া সংঘর্ষে নিহত শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও সংক্ষিপ্ত বৈঠক করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এসসিপি)। 

নাহিদ ইসলাম নিহতের পরিবারের সদস্যদের কাছে নিজে গিয়ে কথা বলেন। পাশাপাশি তাদের কথাগুলো শুনেন ও তাদের সহমর্মিতা জানান।

দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শহরের রেলগেট এলাকা থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) পদযাত্রা শুরু হয়। 

এই সময় দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হান্নান মাসউদ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে জনসমাবেশে রূপ নেয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মসূচি শেষে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতারা দুপুরেই হবিগঞ্জে উদ্দেশে যাত্রা করেন।