বাসস
  ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৪:২১

ভারী বর্ষণে ঝুঁকিতে মহালছড়ি-সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কের ৩৭ পয়েন্টে ভাঙন 

ছবি : বাসস

জীতেন বড়ুয়া

খাগড়াছড়ি, ১৫ জুলাই, ২০২৫(বাসস) : বর্ষার শুরুতে ভারী বর্ষণে খাগড়াছড়িতে ভূমি ধসের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে মহালছড়ি- সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়ক। সড়কটি দৃষ্টিনন্দন সড়ক হিসেবে পরিচিত। কয়েক দফায় ভারী বর্ষণে ২৪ কিলোমিটার নান্দনিক এ সড়কটির ৩৭ পয়েন্টের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধসে রাস্তা দেবে গেছে। 

এতে ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে রাস্তাটি। দ্রুত ভাঙন কবলিত অংশগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। 
সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহালছড়ি- সিন্দুকছড়ি-জালিয়াপাড়া সড়কটি খুবই গুরত্বপূর্ণ। বর্ষায় সড়কের বিভিন্ন অংশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টানা বর্ষণের কারণে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি-সিন্ধুকছড়ি-জালিয়া আঞ্চলিক সড়কের ৩৭ পয়েন্টের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধস ও দেবে গিয়ে যান চলাচল করছে ঝুঁকিতে। পাহাড় ধসে মাটি পড়ায় সড়কের বেশ কিছু পয়েন্টে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সুইথৈই মারমা জানান, মহালছড়ি-জালিয়াপাড়া- সিন্ধুকছড়ির  ২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি নতুন করে তৈরি করার পর মহালছড়ি উপজেলার সাথে  চট্টগ্রাম-ঢাকাসহ যে কোনো জায়গায় পণ্য পরিবহনসহ সহজে যাতায়াত করা যায়। তেমনি সড়কটির  সৌন্দর্য্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখনো এই সড়ক দেখতে প্রতিদিন ভিড় করেন বহু পর্যটক। গেলো কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে কাটাপাহাড় এলাকায় অনেকটা জায়গা জুড়ে দেবে গেছে সড়কটি। 

এছাড়া সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে গিয়ে ও  পাহাড় ধসের কারণে যানবাহনগুলো ঝুঁকিতে চলাচল করছে।  স্থানীয় ও চলাচলকারীরা জানান সড়কটিতে কাটাপাহাড় এলাকার একটি অংশ দেবে গেছে। বৃষ্টির পানিতে আর যেন দেবে না যায় তার জন্য পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিয়ে, কোন রকম বালু ও কংক্রিট দিয়ে ঠিক করলেও ঝুঁকি রয়ে গেছে। এছাড়াও সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে গেছে ও পাহাড় ধসে পড়েছে।  

রফিকুল ইসলাম জানান, মহালছড়ির উৎপাদিত সকল কৃষিপণ্যসহ সকল ধরনের মালামাল এই সড়ক দিয়ে আনানেয়া করা হয়। যদি সড়কটি মেরামত করা না হয়, তাহলে তাদের আবার খাগড়াছড়ি হয়ে পণ্য আনা- নেওয়া করতে হবে। এতে তাদের দূরত্ব ও খরচ দুটোই বাড়বে। দ্রুত এবং স্থায়ী মেরামত না করলে, বৃষ্টিতে যে কোনো মুহূর্তে ধসে গিয়ে বড় ধরনের দুঘর্টনা ঘটতে পারে।

দ্রুত ভাঙন কবলিত অংশগুলো সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের মতে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি মেরামত না করলে সড়কটি ভেঙে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।

খাগড়াছড়ি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি আসলাম কালু বলেন, বড় ক্ষতির আগেই সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করা দরকার । তিনি বলেন, ‘সড়কটির বিভিন্ন জায়গা ধসে গেছে। যোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে সড়ক বিভাগকে দ্রুত সড়কটি মেরামত করার অনুরোধ করছি। এতে মানুষের ভোগান্তি দূর হবে।

খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী, স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্পের মাধ্যমে সড়কটি রক্ষা করা হবে । 

তিনি বলেন, ‘যেহেতু এখানে ম্যাসিভ ধস হয়েছে। প্রাথমিকভাবে পাহাড় ধসের মাটি সরানো হয়েছে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে পাহাড় ধস রোধে আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছি। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা কাজ করব।’

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন (২০ ইসিবি) কর্তৃক এ সড়কটি নির্মিত হয়। পাহাড়ি এলাকার গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি শুধু স্থানীয় জনগণের জন্য নয়, পর্যটন এবং পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থার জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।