শিরোনাম
লক্ষ্মীপুর, ৯ জুলাই, ২০২৫(বাসস) : কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পৌরসভাসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে জেলার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টি এবং নদীতে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় রামগতি ও কমলনগর উপকূলীয় এলাকায় লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে বলে জানা গেছে।
রামগতি আবহাওয়া সতর্কীকরণ অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। যা এই মৌসুমের সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃষ্টি।
আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. সৌরভ হোসেন বাসসকে বলেন, বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, সক্রিয় মৌসুমি বায়ু ও পূর্ণিমার প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এটি আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই মৌসুমের সর্বোচ্চ ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষও অবিরাম বৃষ্টিতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিশেষ করে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সমসেরাবাদ, জেবি রোড, কলেজ রোড, বাঞ্চানগর ও মজুপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে পৌরবাসী। চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম হাসান বাসসকে বলেন, সামনে পরীক্ষা। অনেক পড়াশোনা করতে হবে। কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছি না। স্কুলে যাওয়া বন্ধ। এতে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।
সিএনজি চালক সেলিম উদ্দিন বলেন, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় মানুষ কম। ভাড়া হচ্ছে না। মালিকের জমা পরিশোধ নিয়ে চিন্তায় আছি। চরম কষ্টে দিন কাটছে।
শহরের সবজি ব্যবসায়ী ফিরোজ আলম বলেন, বাজারে লোকজন নেই। এতে করে তরকারি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বৃষ্টির কারণে প্রকারভেদে তরকারির দামও বাড়ছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিত পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা, খাল দখল ও দূষণের কারণে পানি নামতে পারছে না। এ কারণে সামান্য বৃষ্টি হলেই শহরের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানি সরানো না হলে এলাকাবাসীকে আরো দুর্ভোগ পোহাতে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। পাশাপাশি এরকম বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছরও এসময়ে বৃষ্টির কারণে লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যা হয়েছিল।
লক্ষ্মীপুর পৌর প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বাসসকে বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে পানি সরানোর কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি ড্রেনেজ পরিষ্কার করে দ্রুত সময়ে পানি সরানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভবিষ্যৎতে যেন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়, সেজন্য শহরের আশপাশের খাল পরিষ্কার করে পানি প্রবাহ অব্যাহত রাখতে কাজ করছে জেলা,উপজেলা ও পৌরসভা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বাসসকে বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জেলার অনেক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রত্যেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও মাস জুড়ে খালে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এটি চলমান রয়েছে। যেন খালগুলোতে পানি প্রবাহে কোন ধরনের বাধা সৃষ্টি না হয়, এ বিষয়ে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।