বাসস
  ৩০ জুন ২০২৫, ২২:০০

মোংলার পশুর চ্যানেলে কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি : বাসস

খুলনা, ৩০ জুন, ২০২৫ (বাসস): মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ত্রি-মোহনায় শুক্রবার ফ্লাইএ্যাস (সিমেন্টের কাচাঁমাল) বহনকারী জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া পণ্য বোঝাই কার্গোটি দ্রুত উত্তোলনের জন্য মালিক পক্ষকে বন্দরের পক্ষ থেকে জরুরী চিঠি দিয়ে তলব করা হয়েছে।

এদিকে, ফ্লাইএ্যাস ও জাহাজের মধ্যে পলি পড়ে ধীরে ধীরে পানির নীচে তলিয়ে যাচ্ছে পণ্য বোঝাই এ কার্গো জাহাজটি। বাণিজ্যিক জাহাজ ও ছোট বড় নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে শুধুমাত্র একটি ভাসমান বয়া দিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত স্থান চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। এটি দ্রুত উত্তোলন করা না হলে জাহাজটি সরে গিয়ে বন্দরের মূল চ্যানেল ঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

মোংলার পরিবেশ যোদ্ধা মো. নুর আলম শেখ জানান, মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজের ভেতরে থাকা প্রায় ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইএ্যাস নদীর পানিতে মিশে যাচ্ছে। ফ্লাইএ্যাসের পানি নদীতে ভেসে যাওয়ার কারণে সুন্দরবনের জলজ, বনজ ও প্রাণীজ সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জাহাজের নাবিকরা জানান, শনিবার রাতে পণ্য ও জাহাজসহ প্রায় কয়েশ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি দেখিয়ে কার্গো জাহাজটির মাষ্টার মো. বেলাল হোসেন দাকোপ থানায় সাধারণ ডায়রী করেছে। বিপরীত দিক থেকে এসে আঘাতকারী লাইটার জাহাজ “এমভি কে আলম গুলশান-২” কে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। 

মোংলা লাইটার ও লঞ্চ লেবার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উত্তোলন করা যাবে কিনা এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মালিক পক্ষ, লাইটার শ্রমিক ইউনিয়ন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিনিধিরা। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, কি কারণে পণ্য বোঝাই কার্গো জাহাজটি ডুবে গেলো সে বিষয় অনুসন্ধান করতে বন্দরের সহকারী হারবার মাষ্টার পাইলট মো. বেল¬াল হোসেনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তার তদন্ত কাজে সহায়তা করবে বন্দরের নির্বাহী প্রকৌশলী (নৌ) মাহমুদুল হাসান সাগর। আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহিন রহমান।

এছাড়া ফ্লাইএ্যাস বোঝাই কার্গো জাহাজ এমভি মিজান-১ দ্রুত উত্তোলন করার জন্য বন্দরের হারবার বিভাগ থেকে জরুরী চিঠি দেয়া হয়েছে। ১৫ দিনের সময় বেধে দিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। 

উল্লে¬খ্য, জাহাজটি গত ২৭ জুন সকালে ভারত থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইএ্যাস বোঝাই করে ঢাকার মেঘনা ব্রিজের পাশে সিমেন্ট ফ্যাক্টোরিতে যাওয়ার সময় পশুর নদীতে বিরতি করে। শুক্রবার সকালে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি লাইটার জাহাজ “এমভি কে আলম গুলশান-২” কার্গোটিতে আঘাত করে। এতে তলা ফেটে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।