শিরোনাম
চট্টগ্রাম, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : নিজ গ্রামবাসী, পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনন্দময় কিছু সময় কাটিয়ে চট্টগ্রামে দিনভর কর্মসূচি শেষ করে ফিরে গেলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
একান্ত আপনজন ঘরের মানুষ, যিনি সরকারকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ।
আজ বুধবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের অনুষ্ঠান শেষে নিজ গ্রাম হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামের পৈতৃক বাড়িতে যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকেল পাঁচটার পর সেখানে পৌঁছে হাজী মোহাম্মদ নজু মিঞা সওদাগর বাড়ির অদূরে নুরালী বাড়ি উপডাকঘর সংলগ্ন কবরস্থানে শায়িত দাদা-দাদিসহ প্রয়াত স্বজনদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর সেখানে মাঠে সমবেত গ্রামবাসীর সামনে হাজির হয়ে নিকটাত্মীয় ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন। মাঝে মাঝে দুষ্টুমিতেও মেতে ওঠেন তাদের সঙ্গে। শিশুবেলা, কৈশোরকাল, প্রাথমিক পাঠ সব স্মৃতি একে একে তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এসেছিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। এ সুযোগে আপনাদের সঙ্গে দেখা করে গেলাম। আমার খুব ভালো লাগছে, সবার সঙ্গে দেখা হল। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।’
সন্ধ্যা ছয়টার দিকে প্রধান উপদেষ্টা ঢাকার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরের পথে রওনা হন। এ সময় রাস্তার দু’ধারে হাজারো মানুষ হাত নেড়ে প্রধান উপদেষ্টাকে বিদায় জানান।
প্রধান উপদেষ্টার চাচাতো ভাই শেখ হারুন বলেন, ‘নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাথুয়া গ্রামের কৃতিসন্তান। প্রায় ১৮ বছর পর তিনি পৈতৃক বাড়িতে এলেন। এটি আমাদের এবং এলাকাবাসীর জন্য গৌরবের। অনেক বছর পর আমরা তাকে দেখলাম। তাই আমাদের আনন্দের সীমা নেই। এ অনুভূতি প্রকাশ করার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।’
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা হাটহাজারীতে গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠিত প্রথম শাখা ও ‘জোবরা জাদুঘর’ পরিদর্শন করেন।
দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে সকালে বিশেষ বিমানে চট্টগ্রামে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি-৫) পরিদর্শন করেন এবং সেখানে বন্দর ও নৌপরিবহণ খাতের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বন্দরের অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছে বহুল প্রত্যাশিত কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর পর চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনসংক্রান্ত এক সভায় যোগ দেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে জমির দলিল হস্তান্তর করেন। এর পর বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেন।